ঢাকা, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ || ৪ বৈশাখ ১৪৩১
Breaking:
Mukto Alo24 :: মুক্ত আলোর পথে সত্যের সন্ধানে
সর্বশেষ:
  খালেদার নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদ সভায় ১৭ এপ্রিল পালনের প্রয়োজন নেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল        ঝালকাঠিতে ট্রাক, অটোরিকশা ও প্রাইভেট কারের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত        মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর        ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন প্রধানমন্ত্রীর     
২৩৬৪

চারু মান্নানের কবিতা সপ্তক (জীবন প্রকৃতি প্রেম রুপক কবিতা)

কবি চারু মান্নান

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০১৯  

কবি চারু মান্নান

কবি চারু মান্নান

এ জল কেমন জল?

এ জল কেমন জল?
ঘটা করে চোখে ছল ছল; চেয়ে চেয়ে আকুলতা
বারবনিতার অপেক্ষায় ঘটা; উলু বনে মুক্তা ছিটানো বিলাসিতা
বুনোফুলের গায় বৃষ্টির ছিটেফোঁটা।

আষাঢ়ে মেঘবালিকা উড়ে উড়ে
নীল আকাশে ঘুরে ঘুরে; হাওয়ার সাথে সখ্যতা গড়ে
জলের মাদকতা নেশায় পেয়ে বসে; জলের গর্ভে জল ধরে
নিত্য বারবনিতার যৌবন সাজে।

মেঘ ঘন কালো সাজে দিগন্ত ঢাকে
উনুনের চালে সবুজ চালকুমড়া; সদ্য বৃষ্টিস্নাত লকে লকে ডগায়
সবুজ মাদকতা বুনে; আহা কাক ভেজা বিকেল
বারান্দায় কার্নিশে ছিটেফোঁটা জলে চড়ুই খুনসুটি জমে।

আমি তো তোমারই

বৃষ্টি ভেজা জলের চুম্বন
মেঘের ঠোঁট বেয়ে
অধীর সুখ জড়ানো
যেন বৃষ্টির ছোঁয়া।

বার বার এই বর্ষা আসে,
মেঘবালিকার আঁচল ঢেকে
তোমাকে আমার; খুনসুঁটি
সুখ বিবর চুপি চুপি দ্যাখে।

চোখে চোখ রেখে,
নিত্য যে মরন হয়
তোমাতে আমার;
ভালোবাসা না পাওয়ার
সেই বিরহ টুকু,
মেঘ বৃষ্টির শুদ্ধ স্নানে

শরীর সীৎকার; আবিষ্ট
গ্রহন লাগা চাইবার শেষ চুম্বন।

আজ অপরাহ্ণে একপশলা বৃষ্টি চাই

আজ অপরাহ্ণে একপশলা বৃষ্টি চাই
দিনের আগল খোলা যাতনায় ঢলে পরে বেলা
নিঃস্ব বেলার মতো রিক্ত যে; বড় বেশী ঘনালে আঁধার
বহুভুজ মেঘের মতো করে সাজানো সরল আকাশ।

অসম যাতনা কঙ্কাল বুনে,
অহরহ স্মৃতির ঘোর লাগা বিদ্রুপ
মৃত্তিকা ক্ষয়ে ক্ষয়ে;
জীবাশ্ম জন্মদানে বেঁচে থাকে আমৃত্যু।

আমি সেই মৃত্যু সোপান অচেনা পথে
চলেছি গোপনে জোনাক ঝাঁকের পিছে পিছে
ভয় শংকা হীন প্রাণে পথের মরীচিকা বানে
আঁধারে বুঁদ স্বপ্ন ঘোর গঙ্গানোর মতো।

সেই সরল আকাশের মৌনতায় ডুবে
আরধ্য একপশলা বৃষ্টি সবুজ কুঁড়ির জন্য
জীবনে সজীবতার জন্য।

 

আর কি বা চাওয়ার ছিল তার?

আর কি বা চাওয়ার ছিল তার? চাওয়া পাওয়ার এই দীর্ঘ পথ। অমানিশায় রজনি কেটে গেল কত? আকাশে তবুও ভাবনার অম্বর উড়ে। স্বপ্ন ডানায় ভাসে জীবন। তাও আবার চাইবার সুখটুকু পাবার আশায়। দিনের বিপনন রাতের গায়ে কড়া নারে। শুদ্ধ বাতাস গুমোট গরমে রুপ নেয়। মিছে মেঘ কখন যে ঘূর্ণিঝড়ে তড়পায় কে জানে? কে জানে জীবন নিয়তির বেড়াজালে আবদ্ধ? তবু তার চাওয়া ছিল ঢের বেশী। এতটুকু জীবনে যতটুকু দরকার তার চেয়েও বেশী। এই যে বেশী, সেও তো জীবনে জন্য; তাই না? জীবন বাঁচার জন্য না বাঁচার জন্য জীবন? ক্ষুরধার সঞ্চালন বটে।

সব কিছু আপেক্ষিক ভাবনায় মিঠে না। এই চাওয়ার আধিক্য সব সময় একটু বেশী। মেঘ তার শরীর জুড়ে বৃষ্টি বয়ে বেড়ায়। নদী তার জোয়ার ভাটায় খেলা। বসন্ত এলে ফুল ফোটে। তাই বোধ হয় চাওয়ার লোভ সংবরণ করা মুশকিল বটে।

নীল জুড়ে সেই তুমিই ছিলে

প্রতি মুহূর্তে হাঁটছি চেনা অচেনা দুটো পথেই
অচেনা পথে হাঁটলেই সেই পথ নতুন করে চেনা হয়েছে।
অনেক পুরোনো পথে হাটা হয়নি বলে
আবার অচেনা ঠেকেছে; আকাশ পথের ভাবনায় বিষ্ময় পথ
তবুও আমরা আকাশকে চিনি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখে।

নীলের অম্বর ঘন ছায়ায় বৈচিত্র্য আঁকে মনে,
তাই বোধ হয় ভুলার নয় ভ্রম ঘুচিয়ে স্বপ্নবোনা বিশালতা।


যে বিষাদের ভাবনায়, নীল জুড়ে সেই তুমিই ছিলে,
আড়ম্বর ঘনঘটায় পথের বিদ্রুপ এরিয়ে; আকুল করা
পথের ধারে আগাছা বেড়ে উঠা ঘাসফুল ছোঁয়ায়
পথের সেই স্নিগ্ধ মৌনতা এঁকেছিল কাকতালীয় বিষ্ময়।


ফেরা হল না আর বাড়ি!

মেঘের আঁড়ালে যখন রংধনু লুকিয়ে বাঁচে
পঞ্চমী চাঁদের বিভাস; খুঁজে মরে জোনাকি।
আমি তো আমরই মত ছিলাম বেশ
দীঘির জলে ঢেউয়ের মতো নির্লিপ্ত
জ্যৈষ্ঠের চাঁদ যখন ঢেলেছে তার জ্যোৎস্না
ঢেউ খেলানো মত্ত ঝিকিমিকি রং এর আঁচল।
ফেরা হল না আর বাড়ি!
গুহা দ্বারে যে ছিল দাড়িয়ে কালের প্রহর মাথায় চেপে।

আমলকি বনে গ্রহন লাগা বাতাস বলে যায় বিরহ কথন
আমার পথের বাঁকে বসেছে কালের মহুয়া নেশার মেলা
নেশায় বুঁদ এখন সব লুট হয়ে যায় আমারই বিপন্ন কোলাহলে
হৃদয়-কোমল প্রসন্ন রংধনু যেন জলের কোনায় ছড়ানো দেহ তার।

সেই অঙ্গেই আমাকে তার করেছে উত্তরসূরি প্রপিতামহের
ছড়িয়ে দিতে কালে কালে রক্তের আকড়ে; ছড়ানো বিপন্নতা।

আমি তোমাকে জানতে চেয়েছি

আমি তোমাকে জানতে চেয়েছি
আচমকা মেঘের মতো,মেঘ যেমন তার
জলের ছোঁয়ায় বেঁচে উঠে অবলীলায়;
আমিও তেমনি বাঁচতে চেয়েছি!জেগে উঠতে চেয়েছি!
নিঃস্ব মেঘের মতো সব ফুড়িয়ে।

লজ্জাবতীর মতো জড়ানো সীৎকার
কুড়াব তোমার রঙধনু! আঁচল পেতে বস
ফুলের রেণু সাজাবে তোমায়;
সবুজ ঘাসের গালিচায়, বস হে পূর্ণা দেবী
আঁড় চোখে তাকিয়ে রয় যুগোল কাঠবিড়ালি।

 


মুক্তআলো২৪.কম/২২জানুয়ারি২০১৯

 

মুক্তডানা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত