ঢাকা, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
Breaking:
ঢাকা ও ব্যাংকক পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি স্বাক্ষর করেছে     
Mukto Alo24 :: মুক্ত আলোর পথে সত্যের সন্ধানে
সর্বশেষ:
  দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী আহ্বান        বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী     
৩১২

কাউনিয়ায় তিস্তা নদী তিন রূপ মন্ত্রীর আশ্বাসের বানী নিরবে কাঁদে

মুক্তআলো২৪.কম

প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০২১  


সারওয়ার আলম মুকুল,কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধিঃ  ভারতের গজল ডোবার দো-মোহনী থেকে শুরু করে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান নদী তিস্তা। উত্তরের  জেলা নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভেতর দিয়ে এঁকে বেঁকে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদী মিলেছে ব্রক্ষ্মপুত্র নদে গিয়ে। উত্তরাঞ্চলে বয়ে যাওয়া প্রায় ১১৫ কিঃ মিটার তিস্তা নদী থেকে সৃষ্টি হয়েছে অনেক শাখা নদী, তার মধ্যে করতোয়া, মরাসতী, ছোট তিস্তা, বুড়ী তিস্তা প্রমূখ অন্যতম। কাউনিয়ায় ৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার পাশ দিয়ে তিস্তা নদী প্রবাহিত। তিস্তা নদী ভাঙ্গনে কাউনিয়ার মানচিত্র থেকে অনেক আগেই শুভাঘাট নামে একটি গ্রাম বিলিন হয়ে গেছে।

চলতি মৌসুমে প্রায় শতাধিক বাড়িঘর ও ২শ হেক্টর ফসলি জমি নদী গর্ভে তলিয়েগেছে। তিস্তা নদী ভাঙ্গন, ফসল হানী, বন্যা আর শুকনা মৌসুমে পানি কম, এসব থেকে পরিত্রান পেতে নদী পাড়ের মানুষের একটাই দাবী তাদের বাঁচাতে স্থায়ী বাঁধ নির্মান, নদী খনন ও পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়। সেই সাথে বর্তমান সরকারের গৃহীত চায়নার সাথে তিস্তার মহপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন। প্রতিবছর তিস্তার ভাঙ্গনে শতশত বাড়ি-ঘর আর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে নিঃস্ব হচ্ছে নদী পারের মানুষ। তিস্তা নদীতে যখন পানির প্রয়োজন তখন থাকে হাটু পানি আর বালু চর, আর যখন পানির প্রয়োজন নাই তখন ভাসিয়ে দেয় ফলল আর ঘর-বাড়ি। বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের গজল ডোবায় তিস্তা নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করায় এবং পানির ন্যায্য হিস্যা না দেওয়ায় শুস্ক মৌসুমে তিস্তা নদী পানি শূন্য হয়ে কংকালসারে পরিণত হয় আবার বর্ষা মৌসুমে পানি ছেরে দেয়ায় দেখা দেয় বন্যা আর নদী ভাঙ্গন। তিস্তার তলদেশে অজ¯্র পাথর, নুড়ি, বালী আর পলি পড়ে ভরাট হয়ে যায় তিস্তার বুক ফলে বর্ষা মৌসুমে তিস্তার পানি আছরে পড়ে নদীর দুই ধারে।

সে কারনে প্রতি বছর ২০ হাজার মানুষ হয় গৃহ হারা
, গাছপালা, আবাদী জমি হারিয়ে অনেকে হয়ে যায় পথের ভিখেরী। এছাড়াও বর্ষা মৌসুমে ভারত অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় নদীর দুপারের মানুষের জমি, ঘরবাড়ী ডুবে সর্বশান্ত করে দেয় নদী আর খড়া মৌসুমে পানি অভাবে ইরি বোরো সহ অন্যান্য ফসলের চাষাবাদ করতে পারে না নদী তীরের মানুষেরা। উপজেলার টুরু ঘাটিয়াল, তাজরুল ইসলামসহ নদী তীরবর্তি মানুষ সাহায্যে চায় না, চায় বাঁধ নির্মান, নদী খনন ও পানির ন্যায্য হিস্যা। তিস্তা নদী পাড়ের শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তা জানান, নিজপাড়া, তালুকশাহবাজ সহ বেশ কিছু গ্রামের মানুষ তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা বহুবছর থেকে আবেদন,নিবেদন,মানববন্ধন করে আসছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি। প্রভাষক আসাদজ্জিামান শামিম জানান, গাজিরহাটে একটি অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান,শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, বর্তমান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি আশ্বাস দিয়েছিলেন নদী ভাঙ্গন রোধে যা যা করনিয় তা করা হবে। সেই আশ্বাসের কোন বাস্তবায়ন নাই। আশ্বাসের বানী নিরবে কাঁদে। কবে হবে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ তার কোন সঠিক ব্যাখ্যা নেই। শুকনা মৌসুমে নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে শতাধিক মানুষ। নদীকে ঘিরে বেঁচে থাকা হাজার হাজার মৎস্য জীবি আজ বেকার, কেউবা বাব-দাদার পেশা ছেরে জীবন বাঁচার তাগিদে অন্য পেশায় চলে গেছে। টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্রতিবছর নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়। এটি স্থায়ী সমাধান দরকার। বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, নিজপাড়া ও তালুকশাহাবাজ গ্রামে পরিষদের অর্থায়নে বাঁশ দিয়ে পাইলিং তৈরী করে নদী ভাঙ্গন রোধে কাজ করা হয়েছে। তবে স্থায়ী সমাধান না করলে প্রতিবছর এ সমস্যা থেকেই যাবে। নির্বাহী অফিসার তাহমিনা তারিন জানান, ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলেছি এবং মন্ত্রীমহদয়কেও বিষয়টি জানিয়েছি। উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া জানান, তিস্তার ভাঙ্গন রোধে ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে ৩লাখ ৫০হাজার টাকা দিয়েছি প্রয়োজনে আরো দিব, কিন্তু এটির স্থায়ী সমাধান দরকার। মন্ত্রী মহদয়কে বিষয়টি জানাবো যেন তিস্তা মাহা পরিকল্পনার কাজটি দ্রুত শুরু করা যায়। কৃষি নির্ভর রংপুর বিভাগের মানুষের কৃষি আর মৎস্য ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করতে জরুরী ভিত্তিতে স্থায়ী বাঁধ নির্মান, ড্রেজিং আর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এটি এখন সময়ের দাবী।






 

মুক্তআলো২৪.কম

 

 

 

আরও পড়ুন
জেলা খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত