ঢাকা, ০২ আগস্ট, ২০২৫ || ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২
Breaking:
ধানমন্ডিতে সড়কে পড়ল বিরাট গাছ, দুমড়েমুচড়ে গেছে গাড়ি, এক চালক গুরুতর আহত      ১৫ শতাংশ শুল্ক কমানো অন্তর্বর্তী সরকারের আরেকটি সফলতা : আসিফ নজরুল      নেতা-কর্মীদের মতের মূল্য না দিলেও জি এম কাদের স্ত্রীর মতামত প্রাধান্য দেন: আনিসুল ইসলাম     
Mukto Alo24 :: মুক্ত আলোর পথে সত্যের সন্ধানে
সর্বশেষ:
  শুল্কের বিপরীতে কী দিতে হয়েছে, সেটা না জেনে প্রভাব বলতে পারছি না : আমীর খসরু        শুল্কের বিপরীতে কী দিতে হয়েছে, সেটা না জেনে প্রভাব বলতে পারছি না : আমীর খসরু        সরকারে এলে ৫০ লাখ নারীকে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়ার ঘোষণা তারেক রহমানের     
৭৪৭

উদ্যোক্তা তৈরিতে উপজেলা পর্যায়ে বাণিজ্য মেলা আয়োজনের পরামর্শ

মুক্তআলো২৪.কম

প্রকাশিত: ১ জানুয়ারি ২০২৫  

উদ্যোক্তা তৈরিতে উপজেলা পর্যায়ে বাণিজ্য মেলা আয়োজনের পরামর্শ প্রধান উপদেষ্টার

উদ্যোক্তা তৈরিতে উপজেলা পর্যায়ে বাণিজ্য মেলা আয়োজনের পরামর্শ প্রধান উপদেষ্টার


প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে দেশের প্রত্যেক জেলা ও উপজেলায় বাণিজ্য মেলার আয়োজন করতে হবে, যাতে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠার প্রতিযোগিতা তৈরি হয়।

বুধবার, রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে মাসব্যাপী ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘উদ্যোক্তা হবার শক্তি মেলার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে ভবিষ্যতের মেলা হবে সারা দেশ জুড়ে জায়গায় জায়গায় এবং ঢাকায় হবে কেন্দ্রীয়ভাবে চূড়ান্ত মেলা। তরুণদের জন্য আমরা সুযোগ তৈরি করে দেবো। মেলার প্রস্তুতি সারা বছর ধরে চলবে জেলা ও উপজেলায়। সেখান থেকে বাছাই করা হবে চূড়ান্ত পর্যায়ে মেলায় কারা অংশগ্রহণ করবে। ঢাকার মেলায় একজন আর একজনকে দেখে শিখবে, বুঝবে এবং বুদ্ধি নেবে।'

বাংলাদেশের তরুণরা সম্ভাবনাময় ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘অনেক তরুণ-তরুণী কৃষি, হস্তশিল্প, কুটির শিল্প, আইসিটিসহ বিভিন্নখাতে ব্যবসায় ভাল করছে। আন্তর্জাতিক ব্যবসা করছে- ঘরে বসে সফটওয়্যার তৈরি করে বিক্রি করছে। কাজেই প্রত্যেক উপজেলায় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ৩ থেকে ৪ জনকে চিহ্নিত করে তাদের তালিকা করা হবে চূড়ান্ত পর্যায়ে অংশগ্রহণের জন্য। সারা দেশ থেকে তরুণরা দলে দলে এদেরকে দেখতে আসবে। বিদেশ থেকে আসবে। ঢাকায় মেলায় একজন আরেকজনকে দেখে উৎসাহ পাবে।'

এই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে অংশগ্রহণকারীরা কেবল বাংলাদেশের সেরা না, তাদের মধ্যে অনেকে দুনিয়ারও সেরা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উপজেলা থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্যায়ে আসা তরুণদের খরচ সরকার বহন করবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাদের সমস্ত খরচ সরকার বহন করবে, কারণ তারা তো আমাদের পথ প্রদর্শক। তারা জাতিকে পথ প্রদর্শন করবে। দুনিয়াকে পথ প্রদর্শন করবে। অন্যরা তাদের দেখে শিখবে, বিনিয়োগ করতে আসবে। এখানে বিনিয়োগকারিরা আসবে জানার জন্য, বোঝার জন্য- কোন ব্যবসাটা তার জন্য ভালো হবে।

উদ্যোক্তা হবার ক্ষেত্রে টাকার অভাব কোন বাধা নয় উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, 'টাকা নেই, এটা কোন বিষয় না- বুদ্ধি থাকলে টাকা উপার্জন করা যায়। কাজেই আমরা চাই আমাদের তরুণ তরুণী, বয়স্ক বয়স্কা সবাই যেন উদ্যোক্তা হবার শক্তি এই মেলার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে পারে। তাহলে এই মেলা সবার জীবনে বড় ধরনের প্রভাব রেখে যাবে আমাদের জন্য।'

বাংলাদেশ একটা অপূর্ব সুযোগের দেশ উল্লেখ করে সরকার প্রধান আরও বলেন, আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি- ১৭ কোটি মানুষের একটি দেশ। এর মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ হলো তাজা তরুণ-তরুণী। এরকম শক্তি খুব বেশি দেশের কপালে নেই। এ কারণে বারে বারে বলছি, এই তারুণ্য শক্তিকে উন্মোচিত করার কথা। তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা। আরেকটা বিষয় বারে বারে দৃষ্টি আকর্ষণ করি-মানুষ মাত্রই উদ্যোক্তা, শ্রমিক নয়। অন্যের হুকুমে কোন কিছু সৃষ্টি করা মানুষের পথ না। মানুষের পথ হলো নিজে সৃষ্টি করা। নিজের চিন্তায় নিজের ভাবনায় যেটা আসে সেটা তৈরি করা। এই মেলা আমাদেরকে সেই সুযোগ করে দেয়।

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় তরুণদের জন্য আলাদা জায়গা রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বাণিজ্য মেলার একাংশ তরুণদের জন্য থাকবে, এখানে ২৫ বছরের নিচে হতে হবে এ রকম একটা শর্ত দিয়ে দেয়া যেতে পারে। ২৫ বছরের নিচে যারা তারা এখানে কেউ আসবে অন্যের কাছ থেকে শিখতে, আবার কেউ আসবে অন্যকে শেখাতে।

তরুণদের পাশাপাশি তরুণীরা ভাল ভাল ব্যবসা পরিচালনা করছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, অনেক তরুণী রয়েছে যারা  অসংখ্য কাজ করে। ঘরে বসে শাড়ি বিক্রি করে। গৃহিনী চার-পাঁচ বাচ্চার মা ব্যবসা করে- ঘরে বসে রান্না করে খাবার সরবরাহ করে। অর্ডার দিলে ঠিক সেই আইটেমগুলো রান্না করে সরবরাহ করছে। চমৎকার বুদ্ধি খাটিয়ে এ ধরনের ব্যবসা বাণিজ্য যারা করছে-তাদের কাজ তুলে ধরতে হবে।

অধ্যাপক ইউনূস সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে নতুন নতুন পণ্য উদ্ভাবন ও রপ্তানি সমৃদ্ধ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, রপ্তানি পণ্যের মান উন্নয়নে সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে আরও জোরদার, প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দ্রুততার সঙ্গে সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।

প্রধান উপদেষ্টা ফার্নিচার পণ্যকে বর্ষপণ্য ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তিনি বর্ষ উদ্যোক্তা ঘোষণা করার বিষয়ে তাঁর অভিপ্রায়ের কথা উল্লেখ করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (চলতি দায়িত্ব) আব্দুর রহিম খান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস- চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

প্রতি বছরের মতো এবারও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবি যৌথভাবে মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের সম্মানার্থে তৈরি করা হয়েছে ‘জুলাই চত্বর’ ও ‘ছত্রিশ চত্বর’।

এছাড়া দেশের তরুণ সমাজকে রপ্তানি বাণিজ্যে উদ্বুদ্ধ করতে তৈরি করা হয়েছে ইয়ুথ প্যাভিলিয়ন।

 

 

 

 

মুক্তআলো২৪.কম

আরও পড়ুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত