ঢাকা, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ || ১১ বৈশাখ ১৪৩১
Breaking:
রাঙ্গামাটির সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে ছয়জন নিহত, আহত-৭      কক্সবাজারে ভোটার তালিকায় থাকা রোহিঙ্গাদের তালিকা চেয়ে হাইকোর্ট আদেশ     
Mukto Alo24 :: মুক্ত আলোর পথে সত্যের সন্ধানে
সর্বশেষ:
  বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে মরিশাসের প্রতি আহ্বান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর        মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের        থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা     
১১৫৫

হৃদয়ের রক্তক্ষরণ আর আমাদের প্রতীক্ষা:অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব

লেখকঃ অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)

প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০২০  

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) :
একদিকে সদ্য পাখা গজানো পিপিলিকার ওড়াউড়ি আর অন্যদিকে গড্ডলিকা প্রবাহে পাল তুলে চলা একদল মানুষ। ইদানীং পত্রিকার পাতা খুললে কিংবা টিভি সেটটার সামনে বসলে আমার এই অনুভূতিটা খুব বেশি করে হয়। এমনিতেই বঙ্গবন্ধু আর মুজিবাদর্শ একটা শ্রেণীর কাছে চোখের শূল। আর তার ওপর মুজিববর্ষ যখন করোনাকালে, তখন করোনার কল্যাণে যে অন্তহীন বিভ্রাট আর বিভ্রান্তি, তাকে পুঁজি করে অশুভ স্বার্থ হাসিলে আরও কারও কারও মতো সচেষ্ট এরাও। এই প্রেক্ষাপটে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কাটা যখন আসি আসি, তখন এই শক্তির সক্রিয়তা সহসাই দৃশ্যমান। কোন কারণ ছাড়াই সহসাই আগুনে পুড়ল গণপরিবহনের নয়টি বাস। বোমাবাজিতে আবারও সক্রিয় হতে দেখলাম ২০১২ আর ’১৫-এর চিহ্নিত বোমা-অগ্নি সন্ত্রাসীদের। কোথায়, কারা যেন রাজনীতির নিস্তরঙ্গ মঞ্চটাকে আবারও তাতিয়ে তোলায় সচেষ্ট। ইথারেও এ নিয়ে নানা গুঞ্জন।

এরই মাঝে দেখলাম অর্বাচীন কয়েক গলা বিক্রেতার অচিন্তনীয় ঔদ্ধত্য। বাংলাদেশটা যার স্বপ্নের ফসল, এদেশের কাদা-মাটিতে মিশে আছে যার প্রতিটি রক্তকণা, সেই বাংলাদেশের স্বাধীন মাটিতে দাঁড়িয়ে জাতির পিতার ভাস্কর্যকে তুলনা করার দুঃসাহস দেখলাম মূর্তির সঙ্গে। সঙ্গে আবার হুমকিও দেয়া হলো, উচ্ছেদ করা হবে নাকি বাংলাদেশের রাজধানী থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। প্রত্যাশা করেছিলাম তাৎক্ষণিক প্রতিবাদের সুনামিতে উড়ে যাবে অর্বাচীনের দল। কার্যত তা ঘটেনি। প্রতিবাদের ঢেউ সবে জাগতে শুরু করেছে। সুনামিটা এখনও ওঠেনি। কোথাকার কোন পিপিলিকার অমন ঔদ্ধত্য হতচকিত মুজিব ভক্তকুল তাকিয়ে ছিলেন তাদের দিকে, কথায় কথায় যারা মুখে মুজিবাদর্শের ফেনা তোলেন আর সকাল-বিকেল রক্ত ঢেলে শুদ্ধ করেন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে। তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত প্রতিবাদটি প্রত্যাশিতভাবেই আসেনি। তারা তো তখন গড্ডলিকা প্রবাহের ভেলায় ভাসছিলেন। এখন অবশ্য নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছেন। তাও ভাল, তবু তো কুম্ভকর্ণের ঘুমটা ভাঙ্গি-ভাঙ্গি বোধহয়।

এখন আমাদের প্রত্যাশা তীব্র প্রতিবাদ। প্রতিরোধ সহ্যের শেষ সীমাটা বোধ করি আমাদের দেখা হয়েছে যথেষ্টই। আজকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের টানা ক্ষমতায় থাকাটা যখন যুগপূর্তির পথে, তখন পদ্মা সেতুর একের পর এক স্প্যান এদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির হৃদয়ের তৃষ্ণা মেটানোয় যথেষ্ট না। ঢাকার আকাশে ছুটবে মেট্রোরেল আর চট্টগ্রামে কর্ণফুলীর পাতাল তলে ছুটবে গাড়ির বহর, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দলটির কাছে এমনটাই প্রত্যাশিত। যে দলের হাত ধরে স্বাধীন বাংলাদেশ, তারা ক্ষমতায় থাকলে উত্তরবঙ্গে জ্বলতেই হবে পারমাণবিক বিদ্যুতের আলো, আর মহাকাশে থাকতেই হবে বঙ্গবন্ধুর স্যাটেলাইট। এর কম কোন কিছুই গ্রহণযোগ্য হবে না। বলাই বাহুল্য, সেই জায়গায় শতভাগ সফল তারা। কিন্তু এদেশের মানুষের হৃদয়ের যে রক্তক্ষরণ সেই ক্ষতটুকু সারানোটাও তো অতিজরুরী। আজ কোন অর্বাচীন যদি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের উচ্ছেদ করার কথা উচ্চারণ করা তো দূরে থাক, যদি স্বপ্নেও তা ভাবে কিংবা কেউ যদি সাত নবেম্বরের তথাকথিত বিপ্লব দিবসে আমাদের ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করার দুঃসাহস দেখায় তা হলে সেই সুনামি আমাদের তীব্র প্রতিবাদে নিমেষে এসব অর্বাচীনের ভাসিয়ে দেবে বঙ্গোপসাগরের গহীনে। ভাসানচর আর সেন্টমার্টিন পার করে আরও অনেক দূরে। আমরা এখন আমাদের হৃদয়ের ক্ষত সারানো সেই সুচিকিৎসার প্রতীক্ষায়। আমাদের এ প্রতীক্ষা করোনার ভ্যাকসিনের জন্য ব্যাকুলতার চেয়ে এতটুকুও কম না।

লেখকঃ অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)

-চেয়ারম্যান, লিভার বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

-সদস্য সচিব, সম্প্রীতি বাংলাদেশ




 

মুক্তআলো২৪.কম

আরও পড়ুন
পাঠক কলাম বিভাগের সর্বাধিক পঠিত