ঢাকা, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ || ২ বৈশাখ ১৪৩১
Breaking:
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি     
Mukto Alo24 :: মুক্ত আলোর পথে সত্যের সন্ধানে
সর্বশেষ:
  ইসরায়েল ইরানকে পাল্টা আঘাত করবে, তবে কখন করবে তা অনিশ্চিত : নিরাপত্তা বিশ্লেষক        দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু ২ মে        শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনায় মসৃণভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন : মার্কিন থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক        সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে উদীচীর অনুষ্ঠান দুঃখজনক : তথ্য প্রতিমন্ত্রী        বিএনপি বাংলাদেশের অস্তিত্বের মূলে আঘাত করতে চায় : ওবায়দুল কাদের     
৯২৮

স্বাধীনতা দিবস এবং প্রবাসীদের ভাবনা

এম আর ফারজানা

প্রকাশিত: ৫ মে ২০১৪   আপডেট: ৭ জুন ২০১৪

এম আর ফারজানা

এম আর ফারজানা

 ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতা একটি শক্তিশালী শব্দ। পরাধীনতার শিকল ভেঙ্গে আত্নপ্রত্যয়ী বাঙ্গালী এই শব্দটি ছুঁতে পেড়েছিল। উত্তাল অগ্নিঝরা ছিল মার্চ মাস। স্বাধীনতাকামী বাঙ্গালীর কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল পাকিস্তানীরা,কিন্তু বাঙ্গালী বুঝে গিয়েছিল স্বাধীনতার মর্মার্থ, তাদের অস্থিমজ্জায় মিশে গিয়েছিল স্বাধীনতার স্বপ্নের বীজ,যা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে রোপণ করা ছিল “এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম”। বাঙ্গালী অবিচল ছিল মুক্তির অর্জনের জন্য। ২৫ মার্চ, ১৯৭১ সেই ভয়াল কালো রাতের কথা ইতিহাসের পাতায় রচিত আছে অপারেশন সার্চলাইট নামে। পাকহানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাঙ্গালীদের ওপর। পাকিস্তানীদের সেই অবিশ্বাস্য নৃসংসতা,বর্বরতা, নির্বিচার হত্যা, জ্বালাও পোড়াও ছিল নিদারুন পৈশাচিক,অমানবিক। ইতিহাস তার সাক্ষ্য বহন করে। “১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্য রাতে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। কথিত আছে, গ্রেপ্তার হবার একটু আগে ২৫শে মার্চ রাত ১২টার পর (অর্থাৎ, ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে) তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন যা চট্টগ্রামে অবস্থিত তত্কালীন ই.পি.আর এর ট্রান্সমিটারে করে প্রচার করার জন্য পাঠানো হয় ঘোষণাটি নিম্নরুপ: অনুবাদ: এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উত্খাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক। ২৬শে মার্চ বেলাল মোহাম্মদ, আবুল কাসেম সহ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের কয়েক`জন কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান প্রথম শেখ মুজিব এর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি মাইকিং করে প্রচার করেন। পরে ২৬শে মার্চ পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসার মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ঘোষণাপত্রটির ভাষ্য নিম্নরুপ:অনুবাদ: আমি,মেজর জিয়া, বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মির প্রাদেশিক কমাণ্ডার-ইন-চিফ, শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি। আমি আরো ঘোষণা করছি যে, আমরা শেখ মুজিবর রহমানের অধীনে একটি সার্বভৌম ও আইনসিদ্ধ সরকার গঠন করেছি যা আইন ও সংবিধান অনুযায়ী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের সরকার জোট-নিরপেক্ষ নীতি মেনে চলতে বদ্ধপরিকর। এ রাষ্ট্র সকল জাতীর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং বিশ্বশান্তির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আমি সকল দেশের সরকারকে তাদের নিজ নিজ দেশে বাংলাদেশের নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। শেখ মুজিবর রহমানের সরকার একটি সার্বভৌম ও আইনসম্মত সরকার এৰং বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাবার দাবিদার। ১৯৭১ সালে ২৭ মার্চের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা ঘটে যা নয় মাস স্থায়ী হয়”।(সুত্র উইকিপিডিয়া)। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে প্রবাসী বাংলাদেশীরা হাজারও কাজের ভীড়ে পালন করে আসছে “২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস”। আমরা চেষ্টা করি ভীনদেশীদের মাঝে আমাদের বাংলাদেশের গৌরবের ইতিহাস তুলে ধরতে। যান্ত্রিক জীবনেও প্রিয় বাংলাদেশ আমাদের সবার ভাবনার অভিন্ন অংশীদার হয়ে থাকে। মননে, বিশ্বাসে ভালোবাসায় দেশপ্রেম উজ্জীবিত হয় সবসময়। প্রবাসী প্রজন্মের মাঝে সবুজ বাংলার প্রতিচ্ছবি এঁকে দেবার প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাই। শুনলাম এবার স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশে ২৬শে মার্চ আমরা গড়তে যাচ্ছি এক অনন্য বিশ্ব রেকর্ড। লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হবে আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি। এই উপলক্ষে সকল বাংলাদেশী একত্র হবে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড এ। আমরা চাই এই রেকর্ড শুধু ইতিহাসের পাতায় নয় সকল বাঙ্গালী যেন অন্তরে ধারণ করে। ৩০ লক্ষ শহীদের ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে যে পতাকা অর্জিত তার মধ্যে যেন অশুভ ছায়া না পড়ে। ইতিহাস অন্বেষী নব প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের মর্মবোধ। তবেই প্রজন্ম জাগ্রত হবে। এগিয়ে যাবে দেশ। পরিশেষে আমার লেখা কবিতার কিছু লাইন দিয়ে শেষ করছি। স্বাধীনতা আমার সবুজ ধানের ঢেউ খেলানো উদিত হাওয়া। স্বাধীনতা আমার সাহসী বাঙ্গালীর লক্ষ্য প্রাণের পরম পাওয়া। স্বাধীনতা আমার ইতিহাসের সুরক্ষিত সতেজ দলিল। স্বাধীনতা আমার হাজার শব্দের কথা মালার দৃপ্ত মিছিল ।।

 নিউজার্সি যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ----

আরও পড়ুন
পাঠক কলাম বিভাগের সর্বাধিক পঠিত