ঢাকা, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১
Breaking:
Mukto Alo24 :: মুক্ত আলোর পথে সত্যের সন্ধানে
সর্বশেষ:
  খালেদার নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদ সভায় ১৭ এপ্রিল পালনের প্রয়োজন নেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল        ঝালকাঠিতে ট্রাক, অটোরিকশা ও প্রাইভেট কারের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত        মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রতি নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর        ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন প্রধানমন্ত্রীর     
৮০৪

যুবলীগকে একটি আদর্শিক সংগঠন হিসেবে গড়েতোলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

মুক্তআলো২৪.কম

প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

যুবলীগকে একটি আদর্শিক সংগঠন হিসেবে গড়েতোলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

যুবলীগকে একটি আদর্শিক সংগঠন হিসেবে গড়েতোলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের নেতা-কর্মীদের জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আদর্শবিহীন রাজনীতি টিকে থাকতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুবলীগের নেতা-কর্মীদের বলবো জাতির পিতার আদর্শ যদি কেউ বুকে ধারণ করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে রাজনীতি করে তাহলে সেই রাজনীতিতে টিকে থাকে।’

‘কিন্তু যে রাজনীতি করতে গিয়ে লোভের বসবর্তী হয়, অর্থ-সম্পদ যাদের কাছে বড় হয়ে যায়, তারা কিন্তু বেশিদিন টিকতে পারে না, এটা বাস্তবতা,’ যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী এ সম্পর্কে আরো বলেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করে আদর্শ ভিত্তিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সবসময় মনে রাখতে হবে, আমাদের রাজনীতি যাতে দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য হয়, কারণ সেটিই সঠিক রাজনীতি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে যুবলীগের ৪৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউশন মিলনায়তনে (কেআইবি) মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি করতে এসে যারা ভাগ্য তৈরী করতে লেগে পড়ে তারা কিছু টাকা পয়সা করতে পারলেও পরে তাদের আর কোন অস্তিত্ব থাকে না-এটাই প্রমাণিত সত্য।

তিনি বলেন, ’৭৫ পরবর্তী ক্ষতা দখলকারীরা ক্ষমতাকে ভোগের বস্তু হিসেবে নেয়াতে মুষ্টিমেয় কিছু লোকের ভাগ্যের বদল করতে পারলেও দেশ ও জনগণের কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারেনি। তাই, আজকে জনগণের কাছে তাদের কোন স্থান নেই, এই স্থান আসলে থাকে না।

এই উপমাহাদের প্রাচীন সংগঠন আওয়ামী লীগ জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে চলাতেই আজ পর্যন্ত টিকে রয়েছে উল্লেখ করে যুবলীগ নেতা-কর্মীদের তিনি বলেন,‘যুবলীগকে আমি বলবো, জাতির পিতার সেই আদর্শকে বুকে নিয়েই সংগঠন করতে হবে। তাহলেই এদেশের তরুণ সমাজের জন্য কাজ করা যাবে। কারণ, তারুণ্যই হচ্ছে কাজের সময়। ’

তিনি বলেন, ‘তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি,’ এইটি যে কারণে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারের বক্তব্য।

সাবেক যুবলীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে শিল্প মন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম এমপি এবং হারুনুর রশীদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ অনুষ্ঠানে সভাপতিতেব করেন এবং যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন নিখিল সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বিএনপি’র রাজনৈতিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে বলেন, ২ হাজার কোটি টাকা থাকলে কেউ কোনদিন তাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না বলে তারা ভেবেছিল। কিন্তু তাদেরকেও সরে যেতে হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া বড়াই করে আমার কথাই বলেছিলেন-শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দুরের কথা কোনদিন বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবে না। তার কথাটি তার বেলাতেই ফলে গেছে। হাজার হাজার কোটি টাকা তার ছেলেকে (তারেক রহমান) নিয়ে বানিয়েও কিছু করতে পারেনি।’

‘একইভাবে আওয়ামী লীগ একশ’ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না-এটাও তার (খালেদা জিয়া) ঘোষণা ছিল। আল্লাহর রহমতে শক্রুর মুখে চাই দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রথমবার ৫ বছর আর এর পরে টানা ১২ বছর ক্ষতায় আছে বলেই জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি।

তিনি এ সময় বার বার ভোটে নির্বাচিত করায় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা পুনর্ব্যক্ত করেন।
জাতির পিতার নির্দেশে যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশ পুণর্গঠনে যুবসমাজকে কাজে লাগানোর জন্য ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর যুবলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। ’৭৫ এর ১৫ আগষ্ট জাতির পিতা এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে হত্যাকান্ডের শিকার শেখ ফজলুল হক মনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। করোনার কারণে এবার যথাসময়ে এই অনুষ্ঠান হতে পারেনি।

 

এদেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্রান্ত সবসময়ই চলেছে এবং এদেশের তথাকথিত সুবিধাবাদী শ্রেনী তখন এবং পরবর্তীতেও তাদের অজানা কারণে সহযোগিতা করে গেছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য মুক্তিযুদ্ধকালীন যারা বিরোধিতা করেছে, হানাদারদের তোষামোদী করেছে, তাদের হাতে মা-বোনদের তুলে দিয়েছে, রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনী গড়ে তুলেছে এবং এদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছিল তাদের ষড়যন্ত্র কখনো থেমে থাকেনি। যেসব আন্তর্জাতিক শক্তি আমাদের স্বাধীনতায় বিশ^াস করেনি তাদের এই চক্রান্ত অব্যাহত ছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ভাগ্য হলো এদেশের কিছু মানুষ তারা তখনো এটা উপলদ্ধি করতে পারেনি। অথচ যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময় জাতির পিতা কেবল মানুষ আর জমি পেয়েছিলেন আর কিছুই যুদ্ধে অবশিষ্ট ছিল না। সেই দেশ পুনর্গঠনকালে কিছু লোক নানা সমালোচনা, বদনাম করা, অপপ্রচার চালাতে শুরু করে।’

‘এত কিছু করেও বাঙালির মন থেকে জাতির পিতাকে মোছা যায়নি,’ বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী ফারুক এবং রশিদের বিবিসিতে প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে একটি স্বীকারোক্তিরও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তারা বলেছিল, ‘মুজিব এত জনপ্রিয় ছিল যে শত চেষ্টা করেও তাঁকে মানুষের মন থেকে মুছতে পারেনি তাই তাঁকে হত্যা করেছিল।’

প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, প্রতিটি সময়ে তখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হয়েছে বা কোন দুর্যোগ এসেছে যুবলীগ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে যুবলীগ। যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহীদ যুবলীগের সদস্য শহীদ নূর হোসেন, বাবুল, ফাত্তাহসহ অগণিত শহীদ তিনি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

স্মৃতিরোমন্থন করে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক/ স্বৈরাচার নিপাত যাক/’বুকে-পিঠে লিখে মিছিলে যোগদারকারি জীবন্ত পোষ্টার নূর হোসেনের কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘আমি তাঁকে সাবধান করেছিলাম, শার্টটা কোমরে বেঁধে আমার কাছে এসে সে শুধু বলেছিল আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দেন আপা আমি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দেব।’

‘আমি বলেছিলাম আমি শহীদ চাই না, গাজী চাই শার্টটা পর- তোমাকে কিন্তু গুলি করবে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী। কিছুক্ষণ পরেই চারদিকে বোমা ও গুলির আওয়াজ। তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করেও গুলি করা হয়েছিল, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

অনেক সংগ্রামের মধ্যদিয়েই তাঁর দল আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে দেশ গণতন্ত্রের ধারায় ফিরেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই কঠিন পথ আমরা পার হতে পেরছি বলেই জনগণের জন্য কাজ করত পেরেছি এবং আজকে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি।বাসস



 

মুক্তআলো২৪.কম       

আরও পড়ুন
রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত