ঢাকা, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Breaking:
ঢাকায় ভিসা সেন্টার চালু করেছে চীনা দূতাবাস     
Mukto Alo24 :: মুক্ত আলোর পথে সত্যের সন্ধানে
সর্বশেষ:
  স্বচ্ছতার সাথে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই হবে : তথ্য প্রতিমন্ত্রী        বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী     
৬৩১

কোম্পানি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা ডিজিটাল সেবা পাচ্ছেন :

মুক্তআলো২৪.কম

প্রকাশিত: ৮ আগস্ট ২০২১  


বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কোম্পানি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা এখন ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে।তিনি বলেন, ‘যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) অটোমেশন করার পাশাপাশি অনেক সংস্কার আনা হয়েছে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা এখন অনলাইনে অল্প সময় ও কম খরচে কোম্পানি নিবন্ধন সেবা পাচ্ছেন। তবে এই সেবা আরও সহজ করতে আরজেএসসিতে এখনও অনেক সংস্কার প্রয়োজন।’  

রোববার এক ওয়েবিনারে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে কোম্পানি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সময় ও ব্যয় কমানো, প্রক্রিয়া সংক্রান্ত যেসব বাধা ও জটিলতা রয়েছে সেগুলো সহজকীরণের উদ্দেশ্যে বেসরকারি খাতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে। এতে সহযোগিতা দিয়েছে ইউএসএইড ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ ইম্প্রুভিং ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস এনাবলিং এনভায়রনমেন্ট। 

বিল্ড চেয়ারপারসন আবুল কাশেম খানের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে অন্যান্যের মধ্যে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ফিড দি ফিউচার অফিস অফ ইকোনমিক গ্রোথ ইউএসএইডের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি অফিস ডিরেক্টর রেবেকা মোনিকেয়ালা, ইউএসএইড ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ ইম্প্রুভিং ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস এনাবলিং এনভায়রেনমেন্ট একটিভিটি এর চিফ অব পার্টি (এক্টিং) মার্ক শিমান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন।
টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণে প্রয়োজনীয় নীতি সংস্কার বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। কোম্পানি নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় প্রশাসনিক ব্যয় ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনতে আরো পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

তিনি জানান, সরকার বিদ্যমান কোম্পানি নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ ও ব্যবসায় পরিবেশের উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলো কোম্পানি নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে।এসব দেশে কোম্পানি নিবন্ধনে এক ঘন্টা সময় প্রয়োজন হয়। নিউজিল্যান্ডে মাত্র ১০ মিনিটে একটি কোম্পানি নিবন্ধন করতে পারে। বৈশি^ক ও আঞ্চলিক উদাহরণগুলো বিবেচনায় নিয়ে আরজেএসসি প্রয়োজনীয় সংস্কারে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। 

তিনি বলেন, আরজেএসসি এরই মধ্যে বেশ কিছু সংস্কার বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু তারপরও আরো উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় জরুরি।          
                   
স্বাগত বক্তব্যে বিল্ডের চেয়ারপার্সন আবুল কাসেম খান বলেন, আরজেএসসি এরই মধ্যে কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া ডিজিটাইজড করেছে। এরপরও আমাদের কোম্পানি নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। অনানুষ্ঠানিক খাতকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দিতে এগুলো দূর করা জরুরি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম ‘রিমুভিং টাইম, কস্ট অ্যান্ড প্রসেস রিলেটেড বটলনেকস ইন কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। 

এতে তিনি চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল সময়ে পরিচালিত জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন। গত দুই বছরে যেসব কোম্পানি নিবন্ধিত হয়েছে সেগুলোর উপর জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। 

কোম্পানিগুলো নেম ক্লিয়ারেন্স, আরজেএসসি নিবন্ধন, টিআইএন প্রাপ্তি, কোম্পানি সিল তৈরি, কোম্পানির ব্যাংক হিসাব খোলা, ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি ও ভ্যাট রেজিস্ট্রেশনে যেসব সময় ও ব্যয় সংক্রান্ত বাধার সম্মুখীন হয় সেগুলো এতে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। 

তিনি জানান, নতুন ও অনভিজ্ঞ আবেদনকারীদের আরজেএসসি নিবন্ধন পেতে সবচেয়ে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়। এসব আবেদনকারীকে গড়ে ৮দিন সময় ব্যয় করতে হয়, যা তিন দিনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। 
তিনি আরও জানান, ডকুমেন্ট তৈরিতে ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপ, তৃতীয় পক্ষের সাথে আলোচনা, ব্যাংক ফি প্রদান, ইত্যাদি কারণে সম্প্রতি নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর নিবন্ধন পেতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়েছে। তৃতীয় পক্ষ বা পরামর্শকের সম্পৃক্ততার কারণে নিবন্ধন ব্যয় গড়ে ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

জরিপে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, আরজেএসসি নিবন্ধনে ৮৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই তৃতীয় পক্ষের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন পড়ে, যার ফলে ব্যয় ৪৯ দশমিক ২২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তিতে ৬৭ শতাংশ ক্ষেত্রেই তৃতীয় পক্ষের দ্বারস্থ হওয়ার প্রয়োজন পড়ে, যার ফলে অতিরিক্ত ব্যয় ৩২ দশমিক ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত বাাড়িয়ে দেয়। 

তিনি আরও জানান, প্রাক-নিবন্ধনের চেয়ে নিবন্ধন পরবর্তী প্রক্রিয়া আরো বেশি জটিল। এর কারণ হলো, নিবন্ধন পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো অফলাইনে সম্পন্ন করতে হয়। বিল্ডের সিইও সুপারিশ করেন, বিনিয়োগ আকর্ষণে কোম্পানি নিবন্ধনের কার্যকর ও সম্যক সময় কমিয়ে আনা যেতে পারে। একটি সম্পূর্ণ অটোমেটেড রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস চালু করা যেতে পারে। এর বাইরেও তিনি যেসব সুপারিশ করেন তার মধ্যে রয়েছে, সকল পর্যায়ের কোম্পানি নিবন্ধনের জন্য ওয়ান-স্টপ সার্ভিস, আবেদনকারীদের সক্ষমতা উন্নয়ন, পেমেন্টের জন্য মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস অন্তর্ভুক্তকরণ, মোবাইল-বান্ধব ওয়েবসাইট নিশ্চিতকরণ, অনলাইন আবেদন সংশোধন প্রক্রিয়া সহজীকরণ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য এক্সপ্রেস সার্ভিস চালুকরণ, ইত্যাদি।





মুক্তআলো২৪.কম

আরও পড়ুন
অর্থ ও বাণিজ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত