ঢাকা, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ || ১০ বৈশাখ ১৪৩১
Breaking:
ঢাকায় ভিসা সেন্টার চালু করেছে চীনা দূতাবাস     
Mukto Alo24 :: মুক্ত আলোর পথে সত্যের সন্ধানে
সর্বশেষ:
  বিরাজমান তাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে        স্থিতিশীল সরকার থাকায় দেশে উন্নয়ন হয়েছে : ওবায়দুল কাদের        বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ আহ্বান রাষ্ট্রপতির        বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ৫টি চুক্তি এবং ৫টি সমঝোতা স্মারক সই     
১৬১৩

উন্নত বিশ্বের মুদ্রানীতি ব্যর্থ বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায়: ড. আতিউর

অনলাইন

প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট ২০১৪   আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান

উন্নত দেশগুলোর সামষ্টিক অর্থনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টির পর তাদের আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর নেওয়া ব্যবস্থার ফলাফল ছিল অত্যন্ত হতাশাজনক,পশ্চিমা বিশ্বের মুদ্রা ও রাজস্ব নীতির কঠোর সমালোচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন।এ অবস্থার উত্তরণে দেশগুলোর সরকার মুদ্রা এবং রাজস্ব নীতিমালায় যে পরিবর্তন করেছে তা তাৎক্ষণিক বা দীর্ঘমেয়াদী কোন ক্ষেত্রেই শতভাগ ফলপ্রসূ ছিল না। ঢাকায় ১৪টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের নিয়ে দুই দিনব্যাপী সিয়েনজা সিম্পোজিয়ামের শেষদিনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে  তিনি এসব কথা বলেন। আজ শনিবার সকাল নয়টায় রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে এ সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়।
ড. আতিউর বলেন, ২০০৮-২০০৯ সালে উন্নত বিশ্বের অর্থনীতিতে যে মন্দাভাব বিরাজ করেছে তা সারাবিশ্বের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অর্থনীতি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে ভারসাম্যহীন করেছে। বিশ্বের বৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাত্রারিতিক্ত ঝুঁকি গ্রহণ, অপর্যাপ্ত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, কৌশল ও অনিয়ন্ত্রিত তারল্য ব্যবস্থাপনা সম্পদ বাজারে কৃত্রিম অচলবস্থার সৃষ্টি করে। পরবর্তী সময়ে এসব দেশের গোটা অর্থনীতিকে পেছনের দিকে ঠেলে দেয়। তাই সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে আর্থিক খাত এবং সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা করা পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের ২০টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক খাত তদারকি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত আঞ্চলিক ফোরামের নাম সিয়েনজা। ফোরামটি ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ২০টি দেশের ২৪টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ সংগঠনটির সদস্য। ২০১৩-২০১৪ মেয়াদে এ ফোরামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ম্যাক্রো ইকোনোমিক এনভায়রনমেন্ট এন্ড ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর স্ট্যাবিলিটি: ম্যানেজিং ভালনারেবিলিটি এন্ড ক্রাইসিস শীর্ষক মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রসঙ্গে ড. আতিউর বলেন, আর্থিক খাত এবং সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক রাজস্ব ও মুদ্রানীতির নীতিনির্ধারক। স্টেক হোল্ডারদের সাথে সমন্বয় করে এ ব্যাংক মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে। এজন্য এ পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্যে কার্যকর হয়েছে। ফলে রক্ষণশীল মুদ্রানীতি রাজস্ব নীতির সম্পূরক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। গভর্নর বলেন, আমরা এখন আর্ন্তজাতিক অর্থনীতির অংশীদার। তাই আর্ন্তজাতিক অর্থনীতির সমস্যা আমাদের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে। এজন্য আমরা আর্থিক খাতের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে আরো শক্তিশালী করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেশি। এ অবস্থায় টাকা শক্তিশালী হওয়ার অর্থনীতির লাগামকে ধরে রাখতে হচ্ছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা ও অভ্যন্তরীণ সমস্যার পরও বাংলাদেশের অর্থনীতি বিগত কয়েক দশকের চেয়ে উল্লেখ করার মত স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এ সময় তিনি ব্যাংকিং খাতের সাম্প্রতিক সময়ের আর্থিক কেলেঙ্কারীকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এটাকে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা বলে চিহ্নিত করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সিয়েনজা চেয়ারম্যান ও  বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মাত্রাতিরিক্ত ডেরিভেটিভসর ব্যবহার এবং শিথিল আর্থিক ব্যবস্থাপনার কারণে আর্থিক ব্যবস্থা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। এর প্রভাব সামগ্রিক অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করেছে।
২৯তম এ সিম্পোজিয়ামে শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালেয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, পাপুয়া নিউগিনির গভর্নর/ডেপুটি গভর্নরসহ জার্মানী, ভারত, চীন, থাইল্যান্ড, ফিজি, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশ নেন। সিম্পোজিয়ামে বাংলাদেশ ব্যাংকের নয়জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করে। উল্লেখ্য, সিয়েনজা ফোরাম অব ব্যাংকিং সুপারভিশন এর উদ্যোগে ইতোমধ্যে ঢাকায় ২৩ আগস্ট থেকে ছয়দিন ব্যাপী সেন্ট্রাল ব্যাংকিং কোর্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোর্সে বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৪০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।

আরও পড়ুন
অর্থ ও বাণিজ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত