অভিনন্দন বঙ্গবন্ধু অনলাইন আর্কাইভ
লেখকঃ অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)
অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)
অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)ঃস্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের যে সোনালি অর্জন তা কয়জন জানে এটা একটি ভালো বিতর্কের বিষয়বস্তু হতে পারে। মাঝেসাঝেই আড্ডায়, আলোচনায় বিষয়টি উঠে এলে একটা অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ করি। সবাই কেমন যেন ডিফেন্সিভ হয়ে যান। যার-যার সেক্টরে কী কী হয়েছে কিংবা হচ্ছে এসবের ফিরিস্তি তুলে ধরার একটা চেষ্টা লক্ষ করি। সমস্যা হচ্ছে আমরা প্রত্যেকেই হয়তো আমাদের যার-যার সেক্টরের বিষয়গুলো কমবেশি জানি কিন্তু সারা দেশে সামগ্রিক একটা চিত্র আমাদের জানা নেই। গত্-বাঁধা মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, পায়রা বন্দর কিংবা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের নাম, বলে দিয়েই যে যার মতো বক্তৃতা-বিবৃতি আর লেখালেখির কাজটা সারছি। এ তো গেল উন্নয়নের বৃত্তান্ত। এ তো ঘটছে চোখের সামনে। এর বেনিফিশিয়ারি কে নয়? কাজেই প্রচার-প্রচারণায়, জানায় আর জানানোয় একটু-আধটু ঘাটতি থেকে গেলেও সেটা হয়তো শেষমেশ পুষিয়ে যায়। কিন্তু এই যে উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ, এ উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে তো সঙ্গে-সঙ্গে প্রয়োজন জাতিকে ইতিহাসে সুশিক্ষিত করে তোলা, ইতিহাসকে ইতিহাসের জায়গায় ঠিকঠাকমতো পুনঃস্থাপন করা। আমার ভয়ের জায়গাটা এখানেই। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর একটা বড়ো সময়ের জন্য এদেশের শাসনক্ষমতায় ছিল পাকিস্তানি ভাবধারার শাসকগোষ্ঠী। আওয়ামী লীগের এবারের টানা এগারো বছরের শাসনকে বিবেচনায় নিয়েও যদি হিসাব করেন, দেখবেন, আওয়ামী লীগের বিরোধী দলে থাকার পাল্লাটাই ভারী।
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ইতিহাসকে বিকৃত করার আর প্রজন্মের পর প্রজন্মকে বিকৃত ইতিহাস গেলানোর যে ব্যাপক চর্চা আমরা দেখেছি, সেই জায়গাটাকে কাউন্টার করায় আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতা না থাকুক, সাফল্যের ঘাটতি বোধ করি রয়ে গেছে। তার ওপর রয়েছে সরকারের ভেতরে ক্রিয়াশীল সরষের ভূতগুলো। পাঠ্যক্রম সংশোধনে ইতিহাস কি সংশোধিত, না বিতর্কিত হয়েছে—এ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বুদ্ধিজীবীদের রায় আওয়ামী লীগের পক্ষে অনেক ক্ষেত্রেই নাও যেতে পারে। এটি ছোট্ট একটি উদাহরণ। খুঁজলে এমন উদাহরণ আরো পাওয়া যাবে এবং সেজন্য বোধকরি খুব বেশি ঘাঁটাঘাঁটিও করতে হবে না।
এমনি বাস্তবতার মধ্যেই উটকো ঝামেলা হিসেবে ইদানীং দেখা দিচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার। আমার প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীদেরও প্রায়ই দেখি মেসেঞ্জারে প্রেসক্রিপশনের সফট কপি নিয়ে চেম্বারে চলে আসতে। অজপাড়াগাঁয়ের সংখ্যা দেশে এখন ক্রমেই কমছে। এখনো যেসব পাড়াগাঁ আছে সেখানকার রোগীদেরও দেখি ফেসবুক আর ইন্টারনেটে কত সাবলীল তারা! অনেক সময়ই আমার মনে হয়, দেশের এই যে উন্নয়নযজ্ঞ আর এই যে দেশের দূরবর্তী অঞ্চলগুলোতেও প্রযুক্তির সহজপ্রাপ্যতা, এটি গ্রহণের জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি আমাদের আছে কি না। যদি থাকত, তাহলে সহপাঠীকে ধর্ষণের পর ফেসবুক লাইভে কিশোরদের উল্লাস আমাদের মাথা লজ্জায় হেঁট হতো না। আর এই যে প্রস্তুতিহীনতা এর সুযোগটুকু কিন্তু পুরোপুরি নিচ্ছে ঐ অশুভ শক্তি, যারা গত এগারোটি বছর ধরে হয়তো ক্ষমতার কেন্দ্রে নেই, কিন্তু ভালোই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে, জাঁকিয়ে আছে আপনার-আমার আশপাশেই। সুযোগ পেলেই তারা আধুনিক প্রযুক্তির বহুমাত্রিক অপপ্রয়োগে আমাদের সমাজটাকে অস্থিতিশীল করে তোলে আর কদিন পরপর আমাদের দেখতে হয় নাসিরনগর আর বোরহানউদ্দিনের মতো অদ্ভুতুরে ঘটনাগুলো।
হতাশা জাগে বর্তমান সরকারের দূরদৃষ্টির কল্যাণে আজ যখন আউটসোর্সিংয়ে আমেরিকা আর ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান, সেখানে ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডেও কেন ওদেরই হাঁকডাক? প্রগতিশীল মানুষগুলো কী উপার্জন, উত্পাদন আর উন্নয়নে এত বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন যে ভার্চুয়াল জগতে খোঁজখবর নেওয়ার সময় পান না, নাকি এও এক ধরনের উন্নাসিকতা? আমি তো ব্যস্ত, যার কাজ সে-ই করুক—এই ভেবে বাস্তবতাকে এড়িয়ে থাকা।
এর মধ্যেই হঠাত্ একটু আলোর ঝলকানি। গল্পে-গল্পে পরিচয় এক মেধাবী তরুণের সঙ্গে। কজন মিলে একটা ফেসবুক পেজ চালান—বঙ্গবন্ধু অনলাইন আর্কাইভ। বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাংলাদেশের ভার্চুয়াল জগতে বিচরণকারীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ায় কাজ করে যাচ্ছেন তারা। জানালেন বাংলাদেশের সাড়ে ৪ কোটি ফেসবুক ইউজারের মধ্যে ১ কোটির কাছে পৌঁছে গেছে তাদের পেইজটি। শুনে খুবই স্বস্তি পেলাম। অন্তত দেশের এক-চতুর্থাংশ ফেসবুক ইউজার তো সত্যিটা জানতে পারছে। সত্যি জেনেও যদি কেউ মিথ্যায় বাস করতে চায়, সেক্ষেত্রে কার কী বলার আছে? আমাদের কাজ তো এতটুকুই। সম্প্রীতি বাংলাদেশই হোক কিংবা অন্য কোনো প্রগতিমনা সংগঠন, আমরা তো যার যার জায়গা থেকে এ কাজটাই করার চেষ্টা করছি। চেষ্টা করছি যাতে সবাই সত্যিটাকে সত্যির মতো করেই জানতে পারে। কাজেই কলমটা না ধরে আর থাকা গেল না। আন্তরিক অভিনন্দন বঙ্গবন্ধু অনলাইন আর্কাইভের তরুণ তুর্কিদের।
-চেয়ারম্যান, লিভার বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
-সদস্য সচিব, সম্প্রীতি বাংলাদেশ
-অর্থ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি
মুক্তআলো২৪.কম
- এম আর ফারজানা`র কবিতা-
`জ্যোৎস্নারাতে মৃত্যুর অপেক্ষা` - স্বাস্থ্যসেবা এবং উপেক্ষিত ফার্মাসিস্টদের অবদান:সাদেকুর রহমান
- `বৃটেনের কার্ডিফে ওয়েলস আওয়ামীলীগের উদ্যোগে শোক দিবস পালিত`
- কয়েছ আহমদ বকুল এর কলাম-
`শামীম আইভী বিতন্ডা আমাদের মিডিয়া ও অসহায় আইন` - এ.কে. দুলাল এর কবিতা-
`বায়বীয় প্রেম` - কলাম-
`কেবল ব্যক্তিস্বার্থই ধ্বংস করছে একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দলকে` - আমি সব ভুলে যাই, তাও ভুলি না ছাত্রলীগের বোল!
- এলিজা আজাদ এর কবিতা-
`আমার জীবন কাহিনী কি করে শোনাবো তোমায়` - কয়েছ আহমদ বকুল এর কলাম-
সম্প্রচার নীতিমালঃ আদৌ কি প্রয়োজন ছিলো! - কবি,লেখক ও সাংবাদিকঃআব্দুস সাত্তার এর-
কিছু কথা না বললেই নয়...(১০) - একজন অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়ুয়া আর একটি প্রশ্ন
- পল্লব মাহমুদ এর কলাম-
`শুনেই মনে হতে পারে এ আবার নতুন কী ?` - ফেরদৌস হাসান খান এর কবিতা-
`শব্দের বৃষ্টি` - দোলন মাহমুদ এর কবিতা-
`অগূঢ়ে আক্ষেপ` - কয়েছ আহমদ বকুল এর কলাম-
`অরণ্যে রোদন অথবা সমকালীন বিলাপ`