৭৩ কোম্পানির ১০-এর নিচে পিই

অনলাইন ডেস্ক

মুক্তআলো২৪.কম

প্রকাশিত : ০৮:৫০ পিএম, ২১ জুন ২০১৪ শনিবার | আপডেট: ১০:১৪ পিএম, ৮ জুলাই ২০১৪ মঙ্গলবার

পতনের ধারায় রয়েছে পুঁজিবাজার নতুন অর্থবছরের (২০১৪-১৫) প্রস্তাবিত বাজেট পেশের পর থেকেই । আর লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতনে কমে গেছে অধিকাংশ কোম্পানির পিই রেশিও (মূল্য আয় অনুপাত)। বর্তমানে ৭৩টি কোম্পানির পিই রেশিও নেমে গেছে ১০-এর নিচে।

 ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

 ১০ পিই রেশিওর নিচে থাকা ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে ৮টি কোম্পানির পিই ৫-এর নিচে। আর ৫ থেকে ৭-এর মধ্যে রয়েছে ২৩টি কোম্পানি। এছাড়া ৭-এর ঘরে ১২টি, ৮-এর ঘরে ১১টি এবং ৯-এর ঘরে আছে বাকি ১৯টি প্রতিষ্ঠান।প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, তালিকাভুক্ত অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৬৩টি কোম্পানির পিই রেশিও রয়েছে ১০ থেকে ১৫ এর মধ্যে। ১৫ থেকে ২০ এর মধ্যে আছে ৪৪টি প্রতিষ্ঠান। আর ২০-এর উপরে পিই রেশিও আছে ৮৭টি প্রতিষ্ঠানের। বিশেষজ্ঞদের মতে, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পিই রেশিও একটি অন্যতম হাতিয়ার। একজন বিনিয়োগকারী তার বিনিয়োগকৃত অর্থ কতো সময়ের মধ্যে ফিরে পাবেন তা পিই রেশিওর ওপর নির্ভর করে। যে কোম্পানির পিই রেশিও যত কম সেই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকি তত কম।তাদের মতে, যে কোম্পানির পিই রেশিও যত সেই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে তত বছরে বিনিয়োগকারী বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত পাবেন। ধরা যাক একটি কোম্পানির পিই রেশিও ১০। তাহলে এ কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারী ১০ বছরে তার বিনিয়োগকৃত অর্থের সমপরিমাণ ফেরত পাবেন।

 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী  বলেন, পিই রেশিও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। তবে শুধু পিই রেশিওর ওপর নির্ভর করে বিনিয়োগ করা ঠিক হবে না। বিনিয়োগকারীকে কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই ওই কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয়, নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) এবং কোম্পানির ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা বিবেচনা করতে হবে। সেই সঙ্গে কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় কারা আছেন সেটিও বিবেচনা করতে হবে।তার মতে, কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগকারীর সর্বপ্রথম বিবেচনা করতে হবে কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় কারা আছেন। কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় দক্ষ ও সৎ ব্যক্তিরা থাকলে বিনিয়োগকারীরা লাভের মুখ দেখবেন। অন্যদিকে অসৎ ও অদক্ষ ব্যক্তিরা দায়িত্বে থাকলে বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারেন।

 ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফায়েকুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, শেয়ারবাজারে পিই রেশিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারী কতটা মুনাফা পাবেন এবং কত সময়ে বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত আসবে তা পিই রেশিওর ওপর নির্ভর করে।তিনি বলেন, পিই রেশিও কম হলে ঝুঁকিও কম থাকে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ আয়ও বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে বিনিয়োগকারীকে অবশ্যই পিই রেশিওর পাশাপাশি কোম্পানির সার্বিক আর্থিক ফান্ডামেন্টাল অবস্থা বিবেচনা করতে হবে।ডিএসই সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু বাংলানিউজকে বলেন, পিই রেশিও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের একটি হাতিয়ার। তবে সব সময় পিই রেশিওর ওপর নির্ভর করে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকরীরা লভবান হতে পারবেন না।তার মতে, কোম্পানির বর্তমান পিই রেশিও এর থেকে ভবিষ্যৎ পিই রেশিও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বর্তমানে যে কোম্পানির পিই রেশিও কম রয়েছে ওই কোম্পানিটি যদি ভবিষ্যতে ভালো মুনাফা করতে না পারে তাহলে বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে।এজন্য বিনিয়োগাকরীদের কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের আগে পিই রেশিও বিবেচনার পাশাপাশি কোম্পানির বিনিয়োগ পরিস্থিতি, গ্রোথসহ সার্বিক আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করা উচিত।

 

১৭ জুনের লেনদেন শেষে পিই রেশিও ১০এর নিচে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিডি সার্ভিস, এমবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড (মি.ফা.), এআইবিএল ফার্স্ট মি. ফান্ড, এলআর গ্লোবাল মি. ফান্ড, এনসিসি ব্যাংক ফার্স্ট মি. ফান্ড, প্রাইম ব্যাংক, রিলায়েন্স ওয়ান মি. ফান্ড, ফ্যামেলিটেক্স, নর্দার্ন জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, এসআইবিএল, আইসিবি সোনালী ওয়ান, ইউসিবিএল, ইস্টার্ন ব্যাংক, কেপিসিএল, আইএফ‌আইসি ব্যাংক, আইসিবিএএমসিএল দ্বিতীয়, এসইসিবি ফার্স্ট মি. ফান্ড, প্রিমিয়ার ব্যাংক, আইএফআইএল ইসলামীক মি. ফান্ড, সাউথইস্ট ব্যাংক, সেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, গ্রীণ ডেল্টা মি. ফান্ড, এনএলআই ফার্স্ট মি. ফান্ড, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি ফার্স্ট এনআরবি মি. ফান্ড, আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক, প্রাইম ফার্স্ট মি. ফান্ড, ওরিয়ন ফার্মা, ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ব্র্যাক ব্যাংক, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি দ্বিতীয় মি. ফান্ড, পিএফ ফার্স্ট মি. ফান্ড, ট্রাস্ট ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, উত্তরা ফিন্যান্স, জেনারেশন নেক্সট, আইসিবি তৃতীয় এনআরবি মি. ফান্ড, এইমস ফার্স্ট মি. ফান্ড, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি ফার্স্ট এমপ্লয়মেন্ট মি. ফান্ড, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, ফিনিক্স ফিন্যান্স, এশিয়ান ইন্স্যুরেন্স, অষ্টম আইসিবি মি. ফান্ড, দ্বিতীয় আইসিবি মি. ফান্ড, আরএন স্পিনিং, ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, এবি ব্যাংক, সপ্তম আইসিবি মি. ফান্ড, তিতাস গ্যাস, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, গ্রামীণ-২ মি. ফান্ড, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, নিটল ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, সায়হাম টেক্সটাইল, ওরিয়ন ইনফিউশন, মতিন স্পিনিং, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ঢাকা ডায়িং, চতুর্থ আইসিবি মি. ফান্ড, পঞ্চম আইসিবি মি. ফান্ড, ঢাকা ব্যাংক, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স, হাওয়েল টেক্সটাইল, ষষ্ঠ আইসিবি মি. ফান্ড, ব্যাংক এশিয়া, উত্তরা ব্যাংক, সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার কোম্পানি, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স ও পিপলস ইন্স্যুরেন্স ।