কবি,লেখক ও সাংবাদিকঃআব্দুস সাত্তার এর-

কিছু কথা না বললেই নয় ..(০৫)

ওয়াশিংটন ডিসি থেকেঃ আব্দুস সাত্তার

মুক্তআলো২৪.কম

প্রকাশিত : ০৭:৫৫ এএম, ২১ জুন ২০১৪ শনিবার | আপডেট: ০৬:৪০ পিএম, ১২ জুলাই ২০১৪ শনিবার

আমি আজ যার কথা লিখতে যাচ্ছি আপনারা সবাই তাকে চিনেন। তিনি আমার সোনার বাংলার একজন গর্ভিত সন্তান। সোনার বাংলার সন্তানরাই পারে বিশ্বকে জয় করতে। যেমনটি করেছিল ১৯৫২ সালে ভাষা ছিনিয়ে এনে। আজ যা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই ভাষাকে আমাদের দেশের অনেকেই লেখালেখির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে সুনাম কেড়ে নিয়ে আসছেন। আর তারই একজন হলেন হুমায়ন কবীর ঢালী।

বাংলাদেশে কতজন লেখক আছেন যে তাঁদের লেখা বই অন্য দেশে পাঠ্য বই হিসাবে স্কুলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তা আমি ঠিক বলতে পারবো না। তবে ঢালী ভাইয়ের শিশুতোষ গ্রন্থ " A cowboy and a magic mango tree" গ্রিসের প্রাইমারী স্কুলের পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। স্যালুট আপনাকে ঢালী ভাই। আপনি আমাদের দেশকে একধাপ এগিয়ে নিয়েছেন সাহিত্যে।

এবার বই মেলার কথা লিখতেই হয়। পৃথীবীতে প্রথম বই মেলা শুরু হয়েছিল জার্মানের ফ্র্যাংকফুট শহরে। ১৪৩৯ সালের দিকে গুটেনবার্গে প্রিন্টিং প্রেস আবিস্কারের কয়েক বছর পরই বই বিক্রেতারা এই বইমেলা আয়োজন করেছিল। এই হিসাবে বলা যায় বইমেলা প্রায় ৫৭৩ বছরেরও বেশী। আজ এই ফ্র্যাংকফুট বইমেলা পৃথীবীতে সবচাইতে বেশী। সেখানে আংশ নেয় প্রায় ১০০ এর বেশী দেশ এবং তিন লক্ষ লোকের সমাগম হয়।  তারপর বলতে হবে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশী সময় নিয়ে বইমেলা হয়। আর কোন দেশে একমাস ব্যাপী বইমেলা হয়না। এইটা ও আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।

জনাব ঢালী ভাইয়ের প্রায় পঞ্চাশটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এই লেখালেখির স্বীকৃতি হিসাবে তিনি ইতিমধ্যে ইউনিসেফ প্রদত্ত মীনা মিডিয়া এওয়ার্ড, ভারতের চোখ সাহিত্য পুরস্কার, লেখালেখি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রদত্ত বিশেষ সন্মাননা, বাংলা একাডেমীর শিশুসাহিত্য পুরস্কার, অতীশ দীপঙ্কর গবেষণা পরিষদ স্বর্ণপদক সহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।

সাহিত্য প্রেমী ঢালী ভাই লিখে যাচ্ছেন অনবরত তারসাথে আগামী প্রজন্মের জন্য গড়ে তুলেছেন তাঁর নিজ গ্রামে " আমাদের পাঠাগার"।( চাঁদপুর জেলার মতলবে)।

ঢালী ভাইয়ের সাথে আমার কখনও দেখা হয়নি। তাঁর সাথে আমার পরিচয় এফবিতে। আর আজ দেখা হয়ে গেল মুক্তধারা ফাউন্ডেশন, নিউইয়র্ক আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসব ও বইমেলায়। তিনি বসে আছেন বাংলা প্রকাশক স্টলে। কুশল বিনিময় করার পর তিনি আমাকে স্টলের ভিতরে বসতে বললেন। তারপর অনেক অনেক আলাপচারিতা হলো। মনে হল অনেক অনেক দিনের চেনা একজনের সাথে কথা বলছি তো বলছি। কথার এক ফাঁকে উনার জন্য আনা  "জোছনা আসে ফিরে" কাব্যগ্রন্থটি দেই। বইটি হাতে দিয়ে বললাম বইটি প্রচ্ছদ করেছে চারু পিন্টু এবং বইটি প্রকাশ করেছে নন্দিতা। বইটি হাতে নাড়া-চাড়া করে বললেন প্রচ্ছদটি ভালো হয়েছে। তারপর বইটির পাতা উল্টিয়ে বললেন কিছুই তি লিখে দেননি! আপনাকেও লিখে দিতে হবে ঢালী ভাই! আমি এখন পাঠক,আর সব পাঠকই চায় তাঁর বইটি যেন লেখকের কাছ থেক অটোগ্রাফ সহ। আর সেখানেই লেখকের সার্থকতা! ঢালী ভাইয়ের কথা শুনে আমি সত্যি অভিভুত। এমটাই তো লেখকের মন হওয়া উচিৎ! তাই না?

ঢালী ভাইয়ের এই প্রথম মুক্তধারার বইমেলায় আসা। কথায় কথায় তিনি বললেন, আমি এখানে না আসলে বুঝতেই পারতাম না প্রবাসীরা এতো বই প্রেমিক এবং এতো কষ্টের প্রবাস জীবন করার পরও তাঁরা লেখালেখি করছেন। তাঁদের সবাইকে লাল-সবুজের সালাম। আমাকে এই জিনিসটা অনেক নাড়া দিয়েছে! আমি মনে করি আগামীতে প্রবাসী লেখকদের প্রতি বাংলাএকাডেমী ও সরকার একটু নজর দিবেন।

জনাব হুমায়ন কবীর ঢালী ভাই আপনার সাথে কথা বলে ও আমার বইটি দিয়ে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করছি। আপনি একজন অসাধারন মানুষ। আপনার লেখালেখি ছড়িয়ে পড়ুক সারা বিশ্বে। আপনার কলমে বয়ে আনুক সোনার বাংলার সুনাম। আপনি ও আপনার পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুস্থ ও শান্তিতে জীবন যাপন করুন। আমীন।