তরুণ উদ্দোক্তা আলভী`র সূর্যমুখীর হাসি দর্শনার্থীদের মুখে!

মুক্তআলো২৪.কম

মুক্ত আলো

প্রকাশিত : ০৩:৫৫ পিএম, ২৮ মার্চ ২০২২ সোমবার

তরুণ উদ্দোক্তা আলভী`র সূর্যমুখীর হাসি দর্শনার্থীদের মুখে!

তরুণ উদ্দোক্তা আলভী`র সূর্যমুখীর হাসি দর্শনার্থীদের মুখে!


বেড়া পাবনা প্রতিনিধি মুরাদ হোসেন:
বেড়ায় সূর্যমুখী ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য মোহিত করে তুলেছে ভ্রমণ পিপাসু সাধারণ মানুষকে। আলভী সজীব নামের ইন্জিনিয়ারিংয়ে গ্রাজুয়েশন করা এক তরুন উদ্দোক্তার গড়া সূর্যমুখী বাগান দেখতে প্রতিদিন হাজারো মানুষের ডল, পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার বৃশালিখা গ্রামের সূর্যমুখী ফুলের বাগানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও এলাকার নারী-পুরুষ ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন।

তাদের কেউ প্রিয়জনের সঙ্গে সেলফি তুলছেন। কেউ আবার ফুলের সৌন্দর্যের সঙ্গে আনন্দঘন মুহূর্তকে মোবাইলফোনের ক্যামেরায় বন্দি করে রাখছেন, সব মিলিয়ে ফুলের সৌন্দর্যে পর্যটকেরা যেন ক্ষণিকের জন্যে হারিয়ে যাচ্ছেন এক অপার্থিব আনন্দলোকে, দর্শনার্থীদের মুখেও যেন ছড়িয়েছে পড়ছে সূর্যমুখীর হাসি।

তার সাথে বাড়তি বিনোদন যোগ করেছে এই উদ্দোক্তার নেয়া পদক্ষেপ,বাগানের ভিতরে দর্শনার্থীদের জন্য ছবি তোলা ও সাময়িক বিশ্রামের জন্য কয়েকটা বসার ব্যবস্থা ও ভালবাসার প্রতীক-লাভ আকৃতির ফটোসেশান জোন এবং উঁচু ওয়াচ-টাওয়ার।



স্থানীয়রা জানান, সূর্যের মতো হাঁসি দেওয়া হলুদ গালিচা ছড়ানো ফুলের সৌন্দর্যে দেখতে আমরা প্রতিদিন ভীর জমাচ্ছি। এখানে আসার পর দেখলাম জায়গাটি খুব সুন্দর। সূর্যমুখী বাগানে প্রথমবারের মতো পরিবার নিয়ে আসছি,আমরা খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারছি। সুর্যমূখী ফুল দেখেও খুব ভালো লাগলো। বাগানে আগত পর্যটকরা বলেন, ফুল দেখে খুব ভাল লেগেছে। এখানে ঘুরতে এলে মানুষ নিরাশ হবে না,এই ফুল থেকে আবার তেল তৈরি হয়, এই তেল খুব দামী। একইসঙ্গে তেল ও ফুল দুটাই খুব ভালো,মানুষের উচিত বেশি বেশি করে সূর্যমুখী চাষ করা।

বাগান মালিক আলভী সজীব জানান,করোনা কালিন সময় অবসর বসে না থেকে কিছু করা প্রয়োজন ও মানুষকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে,বিনোদনের একটু সুন্দর জায়গা করে দিতে, এরই পেক্ষাক্রমে গতবছর এবং এবার এই সূর্যমুখী চাষ করি। দেশে ভোজ্য তেলের ঘাড়তি ও বিদেশ থেকে তেল আমদানিতে সরকারকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয় যা প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকার মতো,তাই দেশের স্বার্থে একটু হলেও আমি কিছু করতে চাই, এখানে গতবছর ২৮ শতাংশ জায়গায় আমরা প্রথমবারের মতো পরিক্ষামূলক সুর্যমূখী চাষ করেছিলাম। ভালো ফলন ও প্রচুর জনসমাগম হয়েছিলো সেই সাথে লাভবান হয়েছিলাম। তারই পেক্ষাপটে এ বছর প্রায় ২.৫(আড়াই) বিঘা নিয়ে বাগান করা হয়েছে,যেটা ব্যক্তি উদ্যোগে পাবনা জেলার ২য় বৃহত্তম সূর্যমুখী বাগান। জমি চাষে আমাদের প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে অনেক ফুল এখন গাছে আছে তা দিয়ে আশা করছি লাভবান হতে পারবো।

তিনি আরও জানান, এককানি (৩০ শতাংশ) জমিতে সরিষা চাষ করতে যেমন তেল হয় সুর্যমূখীতেও তাই হবে কিন্তু সূর্যমুখীর খরচ কম ও রোগবালাই কম হয়। তেল বিক্রি করে লাভবান হলে আগামীতে আরও বড় পরিসরে প্রজেক্ট আকারে চাষ করবো ও জায়গার পরিমাণ বাড়াবো,সেই সাথে স্ট্রবেরি ও ক্যাপসিকাম চাষ করবো। বেড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্বাহী কৃষি অফিসার শাহজাহান আলী বলেন, সুর্যমূখী চাষ জমির উর্বরতার জন্য ভালো, এতে পোকামাকড় আক্রমণ করে কম, বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক চাষাবাদ হলে পর্যটকদের তৎপরতা কমে আসবে,আশা করছি আগামীতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা থেকে আরও ভালো বীজ আসবে। ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে আগামী দিনে উন্নত জাতের সূর্যমুখী চাষাবাদের পরিকল্পনার কথা জানান তিনি, আরো বলেন এই এলাকায় সূর্যমুখীর চাষ বাড়ছে,এই তরুন উদ্দোক্তার দেখানো সূর্যমুখীর বাগানে করা ও এর থেকে লাভের সম্ভাবনা দেখে আশেপাশের আরও অনেকেই চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছর ৫১৬ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও প্রতিকূল আবাহাওয়ার কারণে ২৪৬ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে ১৮৭ মেট্রিকটন তেল উৎপাদন সম্ভব বলে জানা গেছে।








মুক্তআলো২৪.কম