সম্প্রীতি সংলাপ: করোনার টিকা এলেও স্বাস্থ্যবিধিতে ছাড় দেয়া যাবেনা

মুক্তআলো ২৪.কম

মুক্ত আলো

প্রকাশিত : ০৮:৪৩ পিএম, ১২ মে ২০২০ মঙ্গলবার

সম্প্রীতি সংলাপ: করোনার টিকা এলেও স্বাস্থ্যবিধিতে ছাড় দেয়া যাবে না

সম্প্রীতি সংলাপ: করোনার টিকা এলেও স্বাস্থ্যবিধিতে ছাড় দেয়া যাবে না

সম্প্রীতি বাংলাদেশ’, তার প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলা এবং বিভাগীয় শহরে “সম্প্রীতি সংলাপ” আয়োজন করে আসছে, যেখানে সমাজের সকল শ্রেণী-পেশা ও সকল ধর্মের মানুষ, শিক্ষার্থী, রাজনীতিবিদ, প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ অংশ নিয়ে থাকেন। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ৯ মে অনলাইনে আয়োজন করা হয় সম্প্রীতি সংলাপ, যা ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এবারের সংলাপের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল: “করোনার প্রতিষেধক”। আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।

আলোচনায় দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদগণ অংশ নেন।
পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বই আজ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত। এমন পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আজ করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কার কোনপর্যায়ে রয়েছেতা জানতে এ বিষয়ের ওপর সংলাপের আয়োজন করেছি।
তিনি আরো বলেন, এ বছর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে আমাদের অনেক আয়োজন ছিল। কিন্তু করোনার কারণে বর্তমান পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল অনুষ্ঠান স্থগিত করেছেন। ভবিষ্যতে যদি করা যায় তাহলে আমরা বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত খুশি হবো এবং বিশ্বে যত বাঙালি আছে সবাই খুশি হবেন।

অধ্যাপক আ ব ম ফারুক:

প্রতিষেধক প্রতিপাদ্যের বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন থেকে অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। তিনি বলেন, ‘আমেরিকাতে করোনা নিয়ে যে সকল গবেষণা হচ্ছে তার অন্যতম কেন্দ্র বলা যেতে পারে বোস্টনকে। সেই হিসেবে এখানে অবস্থান করার কারণে ভালোই খোঁজ-খবর পাচ্ছি।’

‘করোনার প্রাদুর্ভাব যখন মার্চ মাসে বিশ্বময় ছড়িয়ে যায় তখন থেকেই দুনিয়ার তাবৎ বিজ্ঞানীরা উঠেপড়ে লাগেন একটি টিকা তৈরির জন্য এবং যারা অসুস্থ তাদের জন্য একটি ওষুধ বের করার জন্য। কিন্তু টিকা তৈরি অনেক সময়সাপেক্ষ বিষয় এটা আমরা জানি। অনেক সময় এক যুগেরও বেশি সময় লেগে যায়। এখন তো জরুরির চেয়েও জরুরি অবস্থা।’
জনাব ফারুক বলেন, তবে একটা সুবিধা ছিল, ২০১৭ সালে যখন পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ইবোলা শুরু হয় এবং প্রায় ১১ হাজার মানুষ খুব দ্রুতই মারা যায়, তখন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা “কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপিয়ার্ডনেস ইনোভেশনস”, সংক্ষেপে ‘সেপি’ নামে একটি কোয়ালিশন করেন। তারা একটা উদ্যোগ নিলেন সবার সাথে সমন্বয় করার। ফলে আমরাও তাদের কাছে জানতে পারি, কী হচ্ছে না হচ্ছে।

এরই সারমর্মটা হচ্ছে এরকম যে, জার্মান বায়োটেকনোলজি কোম্পানি বোস্টনের কাছেই ক্যামব্রিজের মডার্না থেরাপিউটিকস, এখানকার ফাইজার এবং জার্মানির বায়োএনটেক সবাই মিলে মেসেনজার আরএনএ থিওরির ওপর ভিত্তি করে কাজ শুরু করেছেন। তাদের সুবিধা হলো যে তাদের কাজ সবসময় চলমান থাকে। কিছু কাজ হোম ওয়ার্কের মতো আগেই করা থাকে। কখন কোনটা দরকার হয়। সে কারণে বেশ কিছু অগ্রগতি আগে থেকেই ছিল। অনেকগুলো অপশন থেকে তারা তখন করোনার জন্য কোনটা সুইটেবল হবে সেটা অ্যাডপ্ট করে।

আমেরিকার আরেকটি কোম্পানি ইনোভিও, তারা মেসেনজার আরএনএ তত্ত্ব নিয়ে যায়নি। তারা যাচ্ছিলো ডিএনএ ভিত্তিক প্রযুক্তি নিয়ে।

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মেডিসিন স্কুল, তারাও কিন্তু ডিএন এবং আরএনএ’র ভ্যাকসিনগুলোকে জেনেটিক কোডিং ব্যবহার করে করোনা ভাইরাসের যে প্রোটিন সেটাকে প্রটেক্ট করার চেষ্টা করে। সেটারও ভালোই অগ্রগতি হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়াতে বিজ্ঞানীরা ভিন্ন একটি পদ্ধতিতে গিয়েছেন। তারা ভাইরাসের ডিএনএ সিকোয়েন্সিং করে ভ্যাকসিনটা আবিষ্কার করবেন। এর বিশদ আমরা জানি না। তবে অনেকটা ডেভেলপ হয়েছে এবং মানব শরীরে ক্লিনিক্যালি ট্রায়ালের জন্য এটা তৈরি আছে। তারা খুব আশাবাদী যে এ বছরের মধ্যেই মানব শরীরে ক্লিনিক্যালি ট্রায়াল সম্পন্ন করতে পারবেন।

এদিকে ফ্রান্সে পাস্তুর ইনস্টিটিউট হামের টিকা কিছুটা পরিবর্তন করে নতুন টিকা করেছেন। কিন্তু তাতেও বিশ মাসের মতো সময় লাগবে এটাকে ফরমে আনতে।

আমেরিকাতে নোভাভেক্স, জনসন এন্ড জনসনসহ আরো প্রতিষ্ঠান, ফান্সের সানোফি এবং গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন তাদের সবারই কাজ চলছে।

চীনের একাডেমি অব মিলিটারি মেডিকেল সায়েন্স, তারা অবশ্য সব কথা বলছে না। তাদের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন অনুমতি দিয়েছে এর ক্লিনিক্যালি ট্রয়ালের জন্য। তাহলে বোঝা গেলো বিভিন্ন জায়গায় কাজ চলছে। অনেকগুলোই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য তৈরি হয়ে আছে।

এদিকে যৌথভাবে কাজ করছে আমেরিকার ফাইজার ও জার্মানির বায়োএনটেক। তারা বলছে, তারা খুবই আশাবাদী যে, তারা ২ কোটি টিাকার ডোজ করবে এই বছরেই। এখানে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারেরও ৪২০ ‍মিলিয়ন ডলারের সাপোর্ট পাচ্ছে এবং এক বিলিয়ন ডলার তারা নিজেরা ব্যয় করবে।
 
ড. মিহির কুমার ভট্টাচার্য:

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে যুক্ত হওয়া আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী ড. মিহির কুমার ভট্টাচার্য, যিনি এক সময় বাংলাদেশে আইসিডিডিআর,বি তে দুই বছর কাজ করে গেছেন, তিনি ভ্যাকসিন তৈরিতে ভারত এবং আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অগ্রগতির বৈজ্ঞানিক ব্যাখা দিয়ে তাঁর বক্তব্যের উপসংহারে বলছিলেন, ‘আমরা এপ্রোপ্রিয়েট ভ্যাকসিন পাবো কিনা জানি না। ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে এটা কতদিন প্রোটেকশন দেবে? কারণ এই করোনা ভাইরাস বারবারই আমাদের এখানে আসবে। বারবারই আমাদের আক্রান্ত করবে। তবে মানব দেহে একটা ইমিউন সিস্টেম গ্রো করে যাচ্ছে (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হচ্ছে)। এর ফলে যেটা হবে, এই ইমিউন সিস্টেমটাই প্রটেকশন দিবে। আমাদের এখন প্রথম কর্তব্য হলো শিগগিরই একটা ড্রাগ (ওষুধ) আনা যা এর বিরুদ্ধে কার্যকর হবে। এই ভাইরাসটা মুখের মধ্যে দিয়ে ভেতরে ঢুকছে। কিন্তু রেসপিরেটরি সিস্টেমে না ঢুকলে এটা সমস্যা করতে পারবে না। সে জন্য আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। এই ভাইরাসটা মুখ অথবা নাক দিয়ে ঢুকতে পারে। সঠিকভাবে মাস্ক পরে থাকলে এটার ঢোকার সম্ভাবনা নেই। এমনিতেও তো আমাদের ভাইরাস জ্বর হয়, মাথাটা ঝিমঝিম করে, দু-চার দিন পর সেরে যায়। কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ভারতে ব্যবহৃত হচ্ছে এমন কিছু ওষুধের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

ড. মিহির কুমার ভট্টাচার্য বলেন, একটি টিকা বের হলে এটা দীর্ঘ মেয়াদে কার্যকর থাকবে। কারণ করোনা ভাইরাসটা মিউটেটেড হয় খুবই ধীরে। এখন সবচেয়ে বড় কথা হলো, সবাই মিলে এটাকে প্রতিরোধ করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সব সময় প্রশাসনকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। কারণ আমার নিজস্ব একটা ভূমিকা আছে নিজেকে কিভাবে সুরক্ষা করবো।

অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান:

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, সম্প্রীতি বাংলাদেশের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্যাথলজি বিশেষজ্ঞ ডা. অধ্যাপক কামরুল হাসান খান করোনা যুদ্ধে ফ্রন্টলাইন ফাইটার চিকিৎসক, সাংবাদিক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, এই লড়াইয়ে আমাদের সব সময় মানসিক শক্তি থাকতে হবে। তিনি বলেন, এটা হচ্ছে রেসপিরেটরি ভাইরাস। চট করেই কিন্তু ভ্যাকসিনটা পাওয়া যাবে না। কমপক্ষে বারো মাস থেকে আঠারো মাস লাগে। যেভাবে তাড়াহুড়া চলছে এটা আমাদের জন্য আরেকটা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তিনি এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিরও সমালোচনা করেন।

বাংলাদেশে ৬টি প্রতিষ্ঠানকে রেমডেসিভির তৈরির অনুমতি দেয়া হয়েছে। একটি কোম্পানি এরই মধ্যে উৎপাদন করে ফেলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান এফডিএ বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে বলেও তিনি এর সমালোচনা করেন।

এখন পর্যন্ত ইমিউনিটি লেভেল কতটুকু হয়েছে এটা কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন বের করার ক্ষেত্রে যেন তাড়াহুড়াটা না করা হয়। এগুলো ট্রায়াল দেয়ার ক্ষেত্রে যেটুকু সময় দেয়ার দরকার সেটুকু যেন দেয়া হয়।

অধ্যাপক কামরুল হাসান খান আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, তাহলো ভ্যাকসিনের ডিস্ট্রিবিউশন। টিকা আবিষ্কার ও উৎপাদনের পর বিতরণের ক্ষেত্রে ধনী-দরিদ্র দেশের মধ্যে যাতে কোনো বৈষম্য করা না হয়। সকল দেশের সকল মানুষই যেন এই সুবিধাটা পায়।

তাঁর আলোচনায় একটি সুখবর দিয়ে তিনি বলেন, এ পর্ন্ত বিশ্বে যত করোনা রোগী পাওয়া গেছে তাদের ৯৮ শতাংশই হলো মাইল্ড ফরম বা মৃদু উপসর্গের। তাই ভালো হয়ে যাওয়ার পর আর কোনো রেশ থাকে না।

তিনি স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল:

সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, ভ্যাকসিন চলে আসবে। সব কিছু মিলিয়ে এখন পর্যন্ত যে সম্ভাবনা- অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটাই আগে চলে আসবে। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে এই টিকাটা চলে আসা মানেই আলটিমেট সমাধান না। সম্ভবত ভ্যাকসিনটা একবার নিলে সারা জীবনের জন্য প্রতিরক্ষা দিবে না। এটা সম্ভবত কয়েক মাস পর পর কিংবা বছর বছর নিতে হবে এবং সম্ভবত শতকরা একশ ভাগ ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না। তারপরও কিছু না পাওয়ার চেয়ে যদি আমরা ৭০-৮০ ভাগ কার্যকর একটি ভ্যাকসিন পাই যেটা কয়েক মাস প্রটেকশন দিবে, এটা অনেক বড় একটি বিষয়। এর মধ্যে যেটা হবে, আমাদের যে টার্গেট, রোগের প্রকোপটা কমিয়ে আনা, এ বিষয়টি সহজ হবে, পাশাপাশি অনেক মানুষ সখন সংক্রমিত হয়ে যাবে হয়তো হার্ড ইমিউনিটির দিকে আমরা যাব।

অনেক মানুষ আক্রান্ত হলে কিছু মানুষের মধ্যে আপনা-আপনি প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠে। তবে হার্ড ইমিউনিটির দিকে আমাদের তাকিয়ে থাকলে হবে না। অনেক দেশ এমনটা মনে করেছিল। তাদেরকে কিন্তু অনেক মানুষের জীবনের বিনিময়ে এর মূল্য দিতে হয়েছে।

অধ্যাপক মামুন বলেন, তবে আমরা টানেলের শেষ প্রান্তে একটা আলো দেখতে পাচ্ছি। আশার আলো। এটাই কিন্তু শেষ জিনিস না। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে একটা ট্রেন্ড আমি দেখছি, যখনই কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিনের কথা শোনা যাচ্ছে, আমরা মনে করছি সেটাই হচ্ছে সমাধান। মনে করছি আমরা আগামী সাত বা দশ দিনের মধ্যে একটা সমাধান পেয়ে যাচ্ছি। অতএব, আমাদের আর কোনো চিন্তা নেই। রেমডেসিভিরসহ আরো ওষুধ ও ভ্যাকসিন চলে আসছে- এমন খবরে মানুষের মধ্যে একটা শৈথল্যভাব চলে এসেছে। তিন মাসের মধ্যে ভ্যাকসিন চলে আসবে। আর যদি একটা-দুইটা মাস পার করে দিতে পারি তাহলেই তো শেষ হয়ে গেলো। বিষয়টা এতটা সহজ নাও হতে পারে। একটি জিনিস আমাদের মাথায় রাখতে হবে- সামাজিক দূরত্বসহ যেসব স্বাস্থ্যবিধি ও শিষ্টাচার আছে, সেগুলো অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য মিহির কান্তি ঘোষাল, তাপস হালদার, অনয় মুখার্জী, সাইফ আহমেদ, মোঃ হেলাল উদ্দিন, বিপ্লব পাল, বিমান বড়য়া।

 

মুক্তআলো২৪.কম