ডিম- দুধ বিতরণের ব্যতিক্রমী কর্মসূচি লুৎফুন্নেছা ফাউন্ডেশনের

মুক্তআলো ২৪.কম

মুক্ত আলো

প্রকাশিত : ১১:০৫ পিএম, ৯ মে ২০২০ শনিবার

ডিম- দুধ বিতরণের ব্যতিক্রমী কর্মসূচি লুৎফুন্নেছা ফাউন্ডেশনের

ডিম- দুধ বিতরণের ব্যতিক্রমী কর্মসূচি লুৎফুন্নেছা ফাউন্ডেশনের

পাবনায় কর্মহীন অসহায় পরিবারের শিশুদের মধ্যে দুধ আর বয়স্কদের মধ্যে ডিম বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু- অধ্যক্ষ লুৎফুন্নেছা ফাউন্ডেশন। প্রতি পরিবারে ১ লিটার দুধ ও ৪টি করে ডিম দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। প্রতি মাসে ১৫ হাজার লিটার দুধ আর ৬০ হাজার পিস ডিম বাড়ি বাড়ি নিয়ে বিতরণ করা হচ্ছে। করোনা দুর্যোগ চলাকালীন সময় পর্যন্ত প্রতিদিন এ কর্মসূচি চলবে। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু- অধ্যক্ষ লুৎফুন্নেছা ফাউন্ডেশন এর সাধারন সম্পাদক আমিরুল ইসলাম শানু  জানান, মূলত চারটি কর্মসূচি হাতে নিয়ে এ সংগঠনের যাত্রা শুরু। এগুলোর মধ্যে  বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ও তাদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে আত্ননির্ভরশীল করা, যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য সুদমুক্ত ঋণ দিয়ে  কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পর ঋনের টাকা ফেরত নেয়া, দরিদ্রদের সহাযোগিতা করা। তিনি জানান, করোনা সংকটে তারা লক্ষ্য করেছেন দুগ্ধ প্রধান এলাকা সাঁথিয়া- বেড়ার খামারিরা দুধ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

এদিকে দরিদ্র শ্রেণির লোকজন তাদের শিশুদের জন্য দুধ কিনতে পারছেন না। এমন কি ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তারা বাজারে যেতে পারছেন না। দুধ কিনতে বা সংগ্রহ করতে না পেরে অনেক শিশুর বাবা- মা সমস্যায় পড়েছেন। আবার কর্মহীন বয়ষ্ক বা বৃদ্ধরা পুষ্টিহীনতার শিকার হতে চলেছেন। তাই এ দু:সময়ে মানবিকতার প্রত্যয়ে তারা বেড়া- সাঁথিয়া এলাকায় দুধ ও ডিম সরবরাহের কাজ করছেন। তারা খামারিদের বাড়ি থেকে দুধ কিনে দরিদ্র মানুষের বাড়ি বাড়ি তাদের সদস্যদের দ্বারা পেঁছে দিচ্ছেন। এতে খামারিরাও উপকৃত হচ্ছেন। 
সাঁথিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের খামারি হাবিবুর রহমান বলছিলেন, সব কিছু বন্ধ থাকায় বাজারে দুধের উপযুক্ত দাম পাচ্ছিলেন না। এ ফাউন্ডেশন থেকে দুধ কিনে নেয়ায় তিনি উকৃত হচ্ছেন।  

মাধপুর গ্রামের জরিনা খাতুন নামের সুবিধাভোগী এক গৃহবধু জানান, স্বামী কর্মহীন হয়ে পড়ায় তারা তাদের শিশুর জন্য দুধ কিনতে পারছিলেন না। এ অবস্থায় ঘরে বসে এমন সেবা পাওয়ায় তারা অত্যন্ত আনন্দিত ও উপকৃত বলে জানান। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু- অধ্যক্ষ লুৎফুন্নেছা ফাউন্ডেশন এর সভাপতি এ্যাডভোকেট এএসএম আসিফ শামস্ রঞ্জন জানান, তারা বেশ কয়েকমাস আগে থেকেই সংগঠনের নিজস্ব অর্থায়নে সাঁথিয়া- বেড়ার  বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে একদিন দুধ সরবরাহ করতেন। আবার অনেক খামারি পরে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেরাই সেখানে দুধ সাগ্রহে পৌছে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এলাকার অনেক মানুষ কর্মহীন ও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাদের শরীরে পুষ্টির অভাব রয়েছে। সবাই তো চাল, ডাল বিতরণ করছে। সরকার গুঁড়ো দুধ দিলেও শিশুদের তরল দুধ সরবরাহ হচ্ছে না। কিন্তু শিশুদের জন্য তরল দুধ জরুরি। আবার বয়ষ্ক ও বৃদ্ধদের শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধে এন্টিবডি তৈরি করা দরকার। এজন্য তাদেরও ডিম-দুধ খুব দরকার। তাই পবিত্র রমজান পর্যন্ত দুধ, ডিম বিতরণ অব্যাহত থাকবে। স্বাভাবিক অবস্থা না হওয়া পয়ন্ত এ বিতরণ কাজ চলমান থাকবে।

সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম জামাল আহমেদ জানান, সরকারিভাবে যথেষ্ট পরিমাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক শিশুদের জন্যও গুড়াদুধ দেয়া হয়েছে। তবে তরল দুধ দেয়াটা পদ্ধতিগত কারণেই সম্ভব হয়ে ওঠে না। সে মহৎ কাজটি করছে বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু- অধ্যক্ষ লুৎফুন্নেছা ফাউন্ডেশন। তারা আরো কিছু সমাজসেবামূলক কাজ করছে বলে তিনি অবগত বলে জানান। জাতির এ দু:সময়ে বিত্তবানদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে এ ফাউন্ডেশন প্রশংসনীয় কাজ করছে। তথ্যসূত্র: স্বদেশ প্রতিদিন।

মুক্তআলো২৪.কম