জয়পুরহাটে হাজী খালেক মাহমুদ এস্টেট মসজিদের অবহেলিত চিত্র

জেলা প্রতিনিধি-রায়ান নূর

মুক্ত আলো

প্রকাশিত : ০৭:০২ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রোববার

জয়পুরহাটে হাজী খালেক মাহমুদ এস্টেট মসজিদের অবহেলিত চিত্র

জয়পুরহাটে হাজী খালেক মাহমুদ এস্টেট মসজিদের অবহেলিত চিত্র

জয়পুরহাট প্রতিনিধি : জয়পুরহাট হাজী খালেক মাহমুদ ওয়াকফ এস্টেটের জমির এক ফসলের আয় প্রায় ৮০,০০০/-(আশি হাজার) টাকা হলেও জমি ৬৭ বিঘা থেকে কমে বর্তমানে হয়েছে ৩৯ বিঘা। ত্রিশের দশকে মসজিদটি নির্মাণ হলেও প্রায় নব্বই বছরে থেমে নেই ইট-গাথুনির কাজ, আর দিন কয়েক পর শুরু হবে দরজার কাজ, শুধু বাকি রইলো দেওয়ালের বার্নিশ-রং। 

সরেজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কমিটি ও চাষীদের দলাদলিতে এই এস্টেটের এতো সম্পত্তি থাকলেও এর কোন সুফল গ্রামবাসী পায় নি। 

জয়পুরহাটের ইছুয়া (মল্লিকপুর) তে এই হাজী খালেক মাহমুদ ওয়াকফ এস্টেটের মসজিদটি অবস্থিত এবং এস্টেট কমিটির পূর্ব নির্ধারিত সাধারণ সভা অনিবার্য কারণে বন্ধ দেখিয়ে কোন নোটিশ  ছাড়ায় গত শনিবার অনুষ্ঠিত হলো। সেখানে উপস্থিত ছিলেন না ওয়াকফ এস্টেটের সহ- সভাপতি মোঃ  রায়হানুল ইসলাম এবং কমিটির অন্যান্য সদস্য বৃন্দ। এ বিষয়ে ওয়াকফ এস্টেটের মোতাওয়ল্লি ও ইন্সপেক্টর মোঃ নূরুজ্জামান‘কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি গণমাধ্যমে এর কোন সদুত্তর দেন নি এবং বিষয়টি এড়িয়ে যান।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, হাজী খালেক মাহমুদ ওয়াকফ এস্টেটের প্রাথমিক সম্পত্তি প্রায় ৬৭ বিঘা। তারপরেও হাজী খালেক মাহমুদ এস্টেটের মসজিদের ভগ্নদশা পরিলক্ষিত হয় এবং এর কোন উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন-চিত্র চোখে পড়ে নি। এ বিষয়ে কমিটির একজন সদস্য (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) গণমাধ্যমকে বলেন, এস্টেটের প্রায় ৬৭ বিঘা জমি থেকে এখন ৩৯ বিঘাতে নেমে গেছে। এর কারণ বকেয়া খাজনা অনাদায়ে জমি নিলামে তোলা কিছু চাষী ও কমিটির যোগসাজসে তা ক্রয় করা। দীর্ঘদিন ধরে এই জমিগুলোর ফসল যথাযথভাবে আদায় করা হয় নি এবং কমিটির সদস্যরা স্বজনপ্রীতি করেছে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট তৎকালিন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সুদৃষ্টি দেয় নি। কমিটির কোন সদস্য আয়-ব্যয় সংক্রান্ত দাবি দাওয়া মসজিদে তুললে কমিটির অন্যান্য প্রভাবশালী সদস্যের হাতে মারধরের শিকার হন। পূর্বের কমিটিগুলোতে সভাপতিরা কিছু চাষী এবং সদস্যের কাছে  বিভিন্ন ভাবে বাধার সম্মুখিন হয়েছেন। তাই এস্টেটের কোন উন্নয়ন কাজ দেখা যায় নি। মসজিদের কাগজে কলমে এতো আয় থাকার পরেও বাস্তবে জমি কমতেছে, এর একটা সুষ্ঠ তদন্ত হওয়া দরকার।

চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই এস্টেটের জমির মালিকানা ও দখল নিয়ে চাষী ও স্থানীয়দের মধ্যে অনেক সংঘর্ষ ঘটেছে, এর পরেও কমিটির সদস্যরা এবং কর্তৃপক্ষ চাষীদের অভিযোগ আমলে নেয় নি। চাষীরা চাষাবাদ করতে গিয়ে অনেক বাধা এবং বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। চাষীদের অভিযোগের তীর কমিটির দিকে। 

দীর্ঘদিন নানা অনিয়মের কারণে কাগজ-কলমে অনেক জমি-জমা থাকলেও বাস্তবে কতটুকু জমি আছে তা নিয়ে মুসল্লিদের এখনো সন্দেহ জাগে। এ বিষয়ে ওয়াকফ এস্টেটের ইন্সপেক্টর ও মোতাওয়াল্লী মোঃ নূরুজ্জামান জানান, আমি নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেছি, জমিগুলো লিজ দেওয়ার কথা অলোচনা সভায় পেশ করবো কমিটির সিদ্ধান্ত পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।

 হাজী খালেক মাহমুদের ওয়াকফ এস্টেটের মূল মালিক হাজী খালেক মাহমুদ জমি দান করেছিলেন বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য। কিন্তু তার কিছু বংশধর তার সম্পত্তি কুক্ষিগত করার চেষ্টা করে চলছেন। এই নিয়ে পূর্বে বিচার-সালিশ ও মামলা মোকদ্দমা হলেও এস্টেট কমিটির অনিয়মের কারণে জমিগুলো বেদখল হয়ে যায়।

 

 

মুক্তআলো২৪.কম/১০ফেব্রুয়ারি২০১৯