ঢাকায় ভিসা সেন্টার চালু করেছে চীনা দূতাবাস

মুক্তআলো২৪.কম

মুক্ত আলো

প্রকাশিত : ০৭:৪৩ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ শুক্রবার

ঢাকায় ভিসা সেন্টার চালু করেছে চীনা দূতাবাস

ঢাকায় ভিসা সেন্টার চালু করেছে চীনা দূতাবাস

চীনে বাংলাদেশি নাগরিকদের নির্বিঘ্নে ভ্রমণের সুবিধার্থে এখানে চীনা দূতাবাস গতকাল একটি চীনা ভিসা সেন্টার (সিভিসি) চালু করেছে।

ঢাকায় চীনা দূতাবাস জানিয়েছে, সিভিসি দূতাবাসের প্রয়োজনীয়তার সাথে যথাযথভাবে ভিসার আবেদন গ্রহণ এবং আবেদনকারীদের সাইটে অভ্যর্থনা, আবেদনের উপকরণ গ্রহণ, পাসপোর্ট এবং বৈধকরণের নথি প্রদান এবং প্রশ্নোত্তর পরিষেবা প্রদান করার জন্য দূতাবাস কর্তৃক অনুমোদিত।
এই ভিসা সেন্টারের সাথে, বর্তমানে বিশ্বের ৫৫টি দেশে চীনের ১০৩টি ভিসা আবেদন কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে একটি দক্ষ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি এবং পরিচালনার ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে।
সিভিসি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন,  ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা বৃদ্ধির একটি শক্তিশালী গতি বজায় রেখেছে এবং উভয় দেশ সকল স্তরে এবং সকল ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ এবং ঘন ঘন বিনিময় উপভোগ করছে।’
‘আশা করা হচ্ছে এটি চালু হওয়ার পর, সিভিসি ভিসা প্রদানের দক্ষতা এবং ভিসা আবেদনকারীদের প্রদত্ত পরিষেবাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে’ এ কথা উল্লেখ করে ইয়াও ঢাকায় চীনা ভিসা কেন্দ্রের একটি গতিশীল কার্যক্রম এবং এর দুর্দান্ত সাফল্য কামনা করেন।
সম্প্রতি তিনি বলেন, দূতাবাস ক্যান্টন ফেয়ারে অংশগ্রহণকারীদের জন্য ভিসা আবেদনের নথিগুলোকেও সহজ করেছে যারা টিই আমন্ত্রণপত্র থেকে মুক্ত,যা ফেয়ারে অংশগ্রহণকারীরা ভালভাবে গ্রহণ করেছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে, আমি সিভিসি চালু করার জন্য উষ্ণ অভিনন্দন জানাতে চাই এবং সকল স্তরের বন্ধুদের প্রতি আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যারা দীর্ঘদিন ধরে এই কাজের প্রতি যত্নবান ছিলেন এবং সমর্থন দিয়েছেন।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি চীন ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক এবং তাদের চীনা ভিসার চাহিদা বাড়ছে।
তিনি বলেন, ‘গত বছর, ভিসা আবেদনকারীদের সংখ্যা দৈনিক সর্বোচ্চ ১,৫০০ এ পৌঁছেছে। যদিও আমরা জনবলের স্বল্পতায় ছিলাম এবং দূতাবাসের ভিসা হল একটি চাপের মধ্যে ছিল, আমরা ক্রমাগত আমাদের পরিষেবার পাশাপাশি আরও ভিসার আবেদন গ্রহণ করার ক্ষমতা উন্নত করেছি।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, তবুও ভিসা আবেদনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা সম্পূর্ণরূপে পূরণ করা এখনও কঠিন ছিল।
তিনি বলেন, ভিসা সেবার উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা দূর করা এবং জনগণের মধ্যে আদান-প্রদানকে আরও উন্নত করার উদ্দেশ্যে, তারা সতর্কতা ও বিচক্ষণতার সাথে অধ্যয়ন ও আলোচনার পর ঢাকায় সিভিসি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিদেশে যেসব দেশে ভিসা আবেদনের চাহিদা বেশি সেসব দেশে ভিসা আবেদন কেন্দ্র স্থাপন করা একটি সাধারণ আন্তর্জাতিক রীতি এবং অনেক দেশ ইতিমধ্যে বাংলাদেশে এ ধরনের কেন্দ্র স্থাপন করেছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘সিভিসি ডেটা সুরক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং আবেদনকারীদের গোপনীয়তা রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রবিধান অনুসারে, আবেদনকারীরা যাতে আরামদায়ক এবং নির্ভরযোগ্য উভয় পরিষেবা পান তা নিশ্চিত করার জন্য দূতাবাস কঠোরভাবে সিভিসি-এর ক্রিয়াকলাপ তত্ত্বাবধান করবে।’
তিনি বলেন,এই পুরো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা তাদের ভিসা কার্যক্রমে চলমান সহায়তা এবং তদারকিকে উৎসাহিত করে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, গত বছরের ১৫ মার্চ ভিসা ইস্যু সম্পূর্ণরূপে পুনরায় চালু হওয়ার পর থেকে, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সরকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সফর বিনিময়ের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে,দূতাবাস বাংলাদেশী নাগরিকদের চীনে ভ্রমণের সুবিধার্থে বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
ভিসার আবেদনপত্র সংক্ষিপ্ত করা, সারা বছরের জন্য ভিসা ফি কমানো, নির্দিষ্ট কিছু আবেদনকারীকে ফিঙ্গার প্রিন্টিং থেকে অব্যাহতি দেওয়া, অ্যাপয়েন্টমেন্ট ভিসা আবেদন পরিষেবা ছাড়াই সেবা প্রদান, আরও কর্মী নিয়োগ, পরিষেবা কাউন্টার বাড়ানো, অফিসের সময় বাড়ানো, অপেক্ষমান অবস্থা কমিয়ে আনা এবং জরুরী মানবিক বিষয়ের জন্য গ্রীন চ্যানেল সুবিধা দেয়ার জন্য সিভিসি চালু করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো গত বছরের ১৫ই জুন থেকে দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে চীন অনলাইন ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম চালু করেছে।
আবেদনপত্র পূরণ, আবেদনের নথি জমা দেওয়া এবং সাক্ষাৎকার নেওয়া সহ সমস্ত পদক্ষেপগুলো অনলাইনে পরিচালিত হয়, যা আবেদনকারীদের দূতাবাসে যাওয়ার ফ্রিকোয়েন্সি হ্রাস করে।
দূত বলেন,‘এই পদক্ষেপগুলো উল্লেখযোগ্য ফলাফল দিয়েছে, ১০ মাসেরও কম সময়ে দূতাবাস বিভিন্ন ধরণের প্রায় ৪৪,০০০ ভিসা ইস্যু করেছে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় শাখার মহাপরিচালক তৗফিক হাসান, এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সাবেক সভাপতি এস.এন. মঞ্জুর মুর্শেদ, কিয়ানডাইফু কোম্পানির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ওয়াং জিচেং এবং সিআইআইসি গ্রুপের তিয়ান ওয়েন ও ওয়াং জিয়াওজিং অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।








মুক্তআলো২৪.কম