মোতালেব শাহ আইয়ুব এর ছোট গল্প- `ক্যাটবেরী চকোলেটের টিন`

টোকিও থেকে কবি,লেখক মোতালেব শাহ আইয়ুবঃ

মুক্ত আলো

প্রকাশিত : ০৫:৫৪ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ শনিবার | আপডেট: ০৯:৩৬ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বুধবার

কবি,লেখক মোতালেব শাহ আইয়ুব।

কবি,লেখক মোতালেব শাহ আইয়ুব।

 

সারোয়ার একা - একা রান্নাঘরে। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে ঝুম বৃষ্টি। রান্না ঘরের জানালা দিয়ে যতটুক চোখ যায় ঘনবরিষনে কোথাও কেউ নেই। কড়া লিকারের দু,কাপ চা নিয়ে অনাদির ঘরে।
মেয়েটা ঘরে নেই,ছয়টায় সারোয়ার ঘুম থেকে উঠবে।
মেয়েকে ঠিক ছয়টা,পনরোতে ডাকবে- দু,কাপ কড়া লিকারের চা হাতে নিয়ে।
বাপ-মেয়ে একি সাথে-একি রিদমে চুমুক দেবে।
প্রতি ভোরের শুরু দু,কাপ, কড়া লিকারের চা দিয়ে।
চারিদিকে চেয়ে দেখছে মেয়েটার ঘর।
সাদা দেয়ালে ওর হাতের পোর্ট্রেট ওর মায়ের মুখটা আবছা ছায়ার আদল ছাড়া চোখে পড়ে না।


কালো দরজার মাঝা মাঝি একেঁ রেখেঁছে শীতের দুপুর।
জানালা দিয়ে বাতাসে সেই পুরনো কাগজের গন্ধ।
বইয়ের পাহাড়,ছোট,ছোট দুটা কাঠের পুতুল।
ওর ছোট খালা সাথী দিয়েছিলো পাবনার কোন মেলা থেকে।
অনাদি কার কাছ থেকে কোন উপহার পেলে ফেলেনা খুব যতনে রাখে।
পুরানো আলমারির মাথার উপর ওর দিদদীর সাদা কালো ছবি।
ওর বিছানায় ক্যাটবেরী চকোলেটের টিন।
টিনের মুখটা খোলা, কাছে গেলাম।
চোখে পড়ে নদীর হাতে লেখা চিঠি।
ভাবনার ঢেউয়ে তলিয়ে ঢেউ গোনার প্রয়াসে।
আশির দশকে..........
তাতীবাজার নাটকের রিহ্যার্সেলে।
অমল হাপাতে হাপাতে বললো-তুই এক্ষুনি যা। নদী মিটফোর্ড গাইনী ওয়ার্ডে।
আমি দৌড়ে, হাসপাতেলের গেটে দাড়িয়ে হুমায়ুন,বাবু,বাবলু,আলী আহসান।
ওরা নিয়ে গেল নদীর কাছে।
ধব ধবে বিছানায় বালিশের উপর খোলা চুল।
ফ্যানের বাতাসে চুল উড়ছে।
ওর গায়ে হাত দিলাম ওর গাটা বরফ হয়ে আছে আমার কষ্টের ভেতরে কষ্ট।
অনাদিকে আমার কোলে দিলো যেন ছোট্ট নদী আমার কোলে।
ফোঁপাতে- ফোঁপাতে কাঁদছি পেছন থেকে অনাদি জড়িয়ে ধরে।
বাবা মার কথা মনে পড়েছে। তুমি বস তো। এই নাও বর্ষার ফুল।
আমি এক্ষুনি যাবো এক্ষুনি আসবো।
কড়া লিকারের দু,কাপ চা নিয়ে এলো এই নাও বাবা।
একি সাথে একি রিদমে বাবা-মেয়ের কড়া লিকারের চায়ের চুমুক।