ইনিংস পরাজয় থেকে রক্ষা মুশফিকের সেঞ্চুরিতে

অনলাইন

মুক্তআলো২৪.কম

প্রকাশিত : ০২:১২ এএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৪:৪৩ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ শনিবার

মুশফিকুর রহিম

মুশফিকুর রহিম

লেখা থাকবে  প্রাপ্তির খাতায় একটা সেঞ্চুরি। পরিসংখ্যান বলবে, টেস্টটা বাংলাদেশ হারেনি ইনিংস ব্যবধানে। সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টে আর সবই ব্যর্থতার উপাখ্যান। আবার তলিয়ে যেতে পারে ক্যারিবিয়ান সমুদ্রে, তার উদাহরণ দু-একজনের খামখেয়ালিপনায় কীভাবে একটা ভালো সম্ভাবনা উঁকি দিয়েও ।
শেষ দিনে মুশফিকুর রহিম আর নাসির হোসেনের কাছে আশা ছিল, তাঁরা এই টেস্টটা টেনে নিয়ে যাবেন যত দূর সম্ভব। তা শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত মুশফিকুর রহিম সে চেষ্টা করেছেনও। কিন্তু এ কী করলেন নাসির! দিনের ষষ্ঠ ওভারে কেমার রোচের শর্ট বলে অযথাই ব্যাট চালিয়ে মিড অনে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের ক্যাচ। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও আত্মঘাতী শট খেলে আউট হওয়ায় নাসিরের জন্য ড্রেসিংরুমে চাইলে ‘বিশেষ আদালত’ বসাতে পারেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।
শেষ দিনে যেটুকু সম্ভাবনা ছিল, সবই আসলে মাটি হয়ে গেছে নাসিরের ওই খামখেয়ালি আউটে। শুভাগত হোম চৌধুরী ছিলেন। কিন্তু নির্বাচকেরা কী রহস্যময় কারণে তাঁকে হুট করে টেস্ট দলে ডেকে আনলেন, সেই প্রশ্ন বড় করে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ শুভাগত। এরপর রুবেল হোসেন আর আল আমিনকে নিয়ে আর কতুটুকই বা যেতে পারেন মুশফিকুর রহিম! তবু তাঁকে ধন্যবাদ, ক্যারিয়ারে তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরিটা দিয়ে অন্তত ইনিংস পরাজয় এড়াতে পেরেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আরেকবার ব্যাট করাতে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে করতে হতো ৩০২ রান। মুশফিকের সেঞ্চুরির সৌজন্যে সেটা তো হয়েছেই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ১৩ রানের একটা ‘টোকেন’ লক্ষ্যও দেওয়া গেছে।
চতুর্থ দিন শেষে ৭০ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। আঙুলে চোট নিয়েও দাঁতে দাঁত চেপে লড়েছেন। শেষ দিনে টেস্টের আয়ু বাড়ানোর পাশাপাশি সেঞ্চুরির হাতছানিও ছিল সামনে। সঙ্গী ব্যাটসম্যানদের অসহযোগিতায় প্রথম কাজটা ভালোভাবে করতে না পারলেও দ্বিতীয়টা পেরেছেন। নার্ভাস নাইনটিতে যাওয়ার পর ক্ষয়িষ্ণু অপর প্রান্ত যখন তাঁকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করার সব রকম চেষ্টাই করে যাচ্ছিল, তখনই ৯৪ রান থেকে বোলার রোচের মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে পূর্ণ করে ফেলেন সেঞ্চুরি। অবশ্য আগের দিন ব্যক্তিগত ১০ আর ২৫ রানে জীবন ফিরে পাওয়া মুশফিক কালও দুবার বেঁচে গেছেন ক্যারিবীয় ফিল্ডারদের সৌজন্যে। ৭১ রানে জেরোম টেলরের বলে স্লিপে ক্যাচ পড়েছে। আর ১১৫ রানের সময় গ্যাব্রিয়েল শ্যাননের বলে টেলরই সহজ ক্যাচ ফেলেছেন মিড উইকেটে। এ ছাড়া সেঞ্চুরি করার পরপর রোচের বলে একবার আম্পায়ার তাঁকে এলবিডব্লু দিলেও রিভিউ চেয়ে বেঁচে যান মুশফিক। তবু অবশ্য অপরাজিত থাকা হয়নি তাঁর। ১১৬ রান করে টেলরের বলে ডিপ মিড উইকেটের কাছে ক্যাচ হয়েছেন ব্রাভোর। তার আগে শেষ দিনে ১৫ ওভার ৩ বল খেলে বাংলাদেশ যোগ করতে পেরেছে আর মাত্র ৫৮ রান, যার ৪৬-ই এসেছে মুশফিকের ব্যাট থেকে।
১৩ রানের লক্ষ্য আসলে কেবল আনুষ্ঠানিকতাই ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য। ক্রিস গেইল আর ক্রেইগ ব্রাফেট মিলে সেটা সেরে ফেলেন লাঞ্চের ৪৫ মিনিট আগেই।
১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া সেন্ট লুসিয়া টেস্টের জন্য তাহলে কী নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল? মুশফিকের সেঞ্চুরি, দু-একটা ভালো জুটি নাকি সম্ভাবনা জাগিয়েও ভালো কিছু করতে না পারার আক্ষেপ!