অস্ট্রেলিয়াকে ৩১ বছর পর হারের লজ্জা দিল জিম্বাবুয়ে

অনলাইন

মুক্তআলো২৪.কম

প্রকাশিত : ১২:৩৪ এএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৪:৪৪ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ শনিবার

জিম্বাবুয়ে অবশেষে ৩১ বছর পর ওয়ানডে ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়াকে হারালো । ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে প্রথম দেখাতে অসিদের হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। আর এবার দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে অসিদের দ্বিতীয়বারের মত হারের লজ্জা দিল স্বাগতিকরা।হারারে স্পোর্টস ক্লাবে অধিনায়ক এলটন চিগুম্বুরার হার না মানা ইনিংসের উপর ভর করে টুর্নামেন্টের চতুর্থ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৩ উইকেটে হারায় জিম্বাবুয়ে। অস্ট্রেলিয়ার ছুড়ে দেওয়া ২১০ রানের জবাবে ব্যাট হাতে নেমে ১২ বল হাতে রেখেই জয়ের তরী তীরে ভেড়ায় জিম্বাবুয়ে। অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন চিগুম্বুরা।
হামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে আসরের প্রথম দু’ম্যাচ খেলতে পারেনি অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ক্লার্ক। তবে সুস্থ হবার পর এ ম্যাচে অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নেমে টস ভাগ্যে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ক্লার্ক। তবে দলকে ভালো সূচনা এনে দিতে পারেনি অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ও ফিলিপ হিউজ। দলীয় ৩৮ রানের মধ্যেই এ দ্’ুওপেনার ফিরেন সাজঘরে। ফিঞ্চ ১১ ও হিউজ ১০ রান করেন।
এরপর দলীয় স্কোর তিন অংক স্পর্শ করার আগে আরও তিন উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। জর্জ বেইলি ১, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ১৩ ও মিচেল মার্শ ১৫ রানের ফিরেন। ফলে ৫ উইকেটে ৯৭ রানে পরিণত হয় অস্ট্রেলিয়া।
তবে অসিদের নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে এক প্রান্ত আগলে রাখেন ক্লার্ক। প্রতিপক্ষ বোলারদের সমীহ করে খেলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৬তম হাফ-সেঞ্চুরির তুলে নেন তিনি। তবে ইনিংসটাকে ৬৮ রানের বেশি টানতে পারেননি ক্লার্ক। কোন বোলারের কাছে হার মানেনি তিনি, মাথা নত করেছেন ইনজুরির কাছে। হামস্ট্রিং ইনজুরি থেকে সুস্থ হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই, আবারো সেই একই ইনজুরিতে পড়েন ক্লার্ক। ফলে বাধ্য হয়েই আহত অবসর নেন অসি অধিনায়ক। তার ধৈর্য্যশীল ১০২ বলের ইনিংসে মাত্র দুটি বাউন্ডারির মার ছিল।
ক্লার্কের আহত অবসরের পর দলকে সম্মানজনক স্কোরের দিকে নিয়ে যান উইকেটরক্ষক ব্র্যাড হাডিন ও পেসার বেন কাটিং। হাডিনের ৪৯ ও কাটিং-এর ২৬ রানের ওপর ভর করে ৯ উইকেটে ২০৯ রান করতে সমর্থ হয় অস্ট্রেলিয়া। জিম্বাবুয়ের পক্ষে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন প্রসপেয়ার উৎসেয়া, ডোনাল্ড টিরিপানো ও শন উইলিয়ামস।
জবাবে জয়ের জন্য ২১০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৪৪ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে। টিনো মাবোয়ো ১৫ ও সিকান্দার রাজা ২২ রান করে আউট হন। এরপর দলের স্কোরে রানের হাওয়া জোগান হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও উইকেটরক্ষক বেন্ডন টেইলর। ভালোই এগোচ্ছিলেন তাঁরা। তবে দলীয় ১০০ রানে পৌঁছানোর পর সাজঘরের পথ ধরেন মাসাকাদজা, করেন ১৫ রান।
মাসাকদাজকে অনুসরণ করে ছয় রানের ব্যবধানে উইকেট ছাড়েন টেইলর ও উইলিয়ামসও। টেইলর ৩২ ও উইলিয়ামস চার রানে ফিরে যান। এরপর ১৫৬ রানের মধ্যে আরো দুই উইকেট হারিয়ে ম্যাচের হারের পথ তৈরি করে ফেলে জিম্বাবুয়ে। কিন্তু তখনো দলের শেষ ভরসা হিসেবে জ্বলে ছিলেন চিগুম্বুরা।
হারারে স্পোটর্স ক্লাবে এরপর ব্যাট হাতে আলো ছড়ান চিগুম্বুরা। তার সঙ্গী হিসেবে অন্যপ্রান্তে বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যাট করেন উৎসেয়া। শেষ পর্যন্ত এই জুটির হার না মানা ৫৫ রানে জয়ের স্বাদ পায় জিম্বাবুয়ে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৭তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাচের সেরা চিগুম্বুরা। তার ৬৮ বলের ইনিংসে ৪টি বাউন্ডারি ছিল। অন্যপ্রান্তে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৮ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত থাকেন উৎসেয়া। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৪৪ রানে ৪ উইকেট শিকার করেও দলকে হার থেকে রক্ষা করতে পারেননি স্পিনার নাথান লিঁও।
টুর্নামেন্টে এই প্রথম জয়ে তিন ম্যাচ থেকে চার পয়েন্ট সংগ্রহে নিয়ে টেবিলের তলানিতেই থাকল জিম্বাবুয়ে। আর এই ম্যাচ হেরেও তিন ম্যাচ থেকে পাঁচ পয়েন্ট সংগ্রহে নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকল অস্ট্রেলিয়া।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আগামী মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্র্রেলিয়া ২০৯/৯, ৫০ ওভার (মাইকেল ক্লার্ক ৬৮ আহত অবসর, ব্র্যাড হাডিন ৪৯, শন উইলিয়ামস ২/২১)।
জিম্বাবুয়ে ২১১/৭, ৪৮ ওভার (এলটন চিগুম্বুরা ৫২, ব্র্ন্ডেন টেইলর ৩২, নাথান লিঁও ৪/৪৪)।
ফল : জিম্বাবুয়ে তিন উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : এলটন চিগাম্বুরা (জিম্বাবুয়ে)।