বাংলাদেশকে একমাত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র চলছে: রিজভী
মুক্তআলো২৪.কম
মুক্ত আলো
প্রকাশিত : ০৬:৪৩ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০২৫ শনিবার

বাংলাদেশকে একমাত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র চলছে: রিজভী
বাংলাদেশকে আবারও একমাত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির এই নেতা বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসনে দলীয় নিয়োগের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হচ্ছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সংগ্রামের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। যেখানে আইনের শাসন থাকবে এবং ভয়-ভীতির বাইরে মানুষ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারবে।
আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের অমর কীর্তিগাথা স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দ, ঢাকা কলেজ এই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, যে আত্মত্যাগের বিনিময়ে নতুন প্রজন্ম রক্ত দিয়েছে, সেই রক্তের দাম রাখতে হবে। পাঁচ বছরের শিশু থেকে শুরু করে অসংখ্য শিক্ষার্থী জুলাই–আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানের মিছিলে প্রাণ দিয়েছে। যে সময় সন্তানেরা বাবা-মায়ের কোলে থাকার কথা, হাতে বই আর টিফিন নিয়ে থাকার কথা, সেই সময়ে তারা বুক চিতিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে। তাই প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব।
তবে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে এখনো মিথ্যা মামলা, চাঁদাবাজির অভিযোগ ও দমননীতি চলছে; সরকারি দপ্তর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ এবং চাকরির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক আনুগত্যকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।
দেশে চলমান রাজনৈতিক সংকট, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং ন্যায়বিচারের অভাব নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন রিজভী। তিনি বলেন, দেশের অসহায় মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, আর রাস্তায় রাহাজানি-সন্ত্রাস যেন নিত্যদিনের চিত্র হয়ে উঠেছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি তাঁর কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বলেছেন—রোকন না হলে চাকরি থাকবে না। রিজভী প্রশ্ন তোলেন—এ জন্য কি তাহলে মুগ্ধ, আবু সাঈদরা শেখ হাসিনার পুলিশের বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল?
২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০১৮ সালের রাতের নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের ‘ডামি নির্বাচন’ গণতন্ত্রকে কলঙ্কিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন রিজভী।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা বছরের পর বছর গণতন্ত্রের আন্দোলনকে দমন করতে গণমাধ্যম, বুদ্ধিজীবী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করেছেন। আন্দোলনকারীদের ‘জঙ্গি’ ও ‘অগ্নিসন্ত্রাসী’ বলে চিত্রিত করা হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী ও গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর। অথচ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁকে (শেখ হাসিনা) বলা হয়েছে ‘ফাইটার অব ডেমোক্রেসি’, ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’। অন্যদিকে শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবার ও ঘনিষ্ঠরা দেশের ব্যাংক খালি করে বিদেশে অর্থ পাচার করেছে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। এ ছাড়া বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী, ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের এজিএস অধ্যাপক সৈয়দ মাজহারুল হক সোহাগসহ গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের স্বজনেরা আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্রবৃন্দের পক্ষ থেকে গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের স্বজনদের উপহার বিতরণ করা হয়।
মুক্তআলো২৪.কম