আনুপাতিক নয়, চিরায়ত গণতন্ত্রের ভোটই চায় বিএনপি : রিজভী

মুক্তআলো২৪.কম

মুক্ত আলো

প্রকাশিত : ০৬:৫৫ পিএম, ৩ জুলাই ২০২৫ বৃহস্পতিবার

আনুপাতিক নয়, চিরায়ত গণতন্ত্রের ভোটই চায় বিএনপি : রিজভী

আনুপাতিক নয়, চিরায়ত গণতন্ত্রের ভোটই চায় বিএনপি : রিজভী


আনুপাতিক ভোট পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ‘আনুপাতিক ভোটের প্রয়োজন কী? এই ব্যবস্থায় স্থানীয় পর্যায়ে কোনো নেতা তৈরি হবে না। নেতৃত্বের বিকাশও হবে না। আমরা চিরায়ত গণতন্ত্রের পক্ষে, যেখানে বৈধ ভোটাররা ভোট দিয়ে নিজের এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবে।’

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে রংপুর নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়স্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেছেন, এক চক্ষুবিশিষ্ট দানবকে বিদায় করা হয়েছে। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা লড়াই করে এ দেশ ১৬ বছরের ভয়াবহ দিন পার করেছে। সেই ১৬ বছর তরুণরা বাসায় ঘুমাতে পারেনি। হত্যা-গুম করেছে বিএনপিসহ অনেক মানুষকে।
আমাদেরকে ১৬ বছর পাড়ি দিতে হয়েছে। শেখ হাসিনার হাত থেকে কেউ রক্ষা পায়নি। রক্ত দিয়েছে আবু সাঈদ। 

রিজভী আরো বলেন, ‘একজন মানুষ দীর্ঘদিন মানুষের পাশে থেকে নেতা হয়েছেন।অথচ আনুপাতিক ভোটে তাকে নয়, দলকে ভোট দিতে হবে। এরপর দল থেকে বাছাই করে এমপি ঘোষণা করা হবে—এটি আরো বেশি স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেবে। যেখানে প্রায় ১২ কোটি ভোটার রয়েছে, সেই ১৮ কোটি মানুষের দেশে কেন এমন ভোট পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে? যে গণতন্ত্রের জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে। বছরের পর বছর কারাবরণ করেছে, সেই গণতন্ত্র আজ প্রশ্নবিদ্ধ।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে দেশের কোনো তরুণ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি।কখন কাকে ধরে নিয়ে যাবে, আর কার রক্তাক্ত লাশ তিস্তা, গঙ্গা কিংবা শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে পাওয়া যাবে—এটাই ছিল নিত্যদিনের চিত্র। এই ভয়াবহ সময় পার করতে হয়েছে আমাদের। শেখ হাসিনার দমন-পীড়নের হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি। সেই রক্তপিপাসুরা যাতে আবার ফিরে না আসতে পারে, তার জন্য গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য প্রয়োজন।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, ‘গণতন্ত্র মানে হচ্ছে, একে অপরের বিরুদ্ধে মুক্তভাবে মতপ্রকাশ ও সমালোচনার সুযোগ থাকবে। কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আমরা সবাই এক হতে পারি। গত ১৬ বছরে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অকল্পনীয় দমন-পীড়ন চালিয়েও দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা যায়নি। গুম, খুন ও নির্যাতনের মধ্যেও বিএনপি ঐক্য ধরে রেখেছে। গণতন্ত্রের আন্দোলনে বিএনপি সব সময় আপসহীন।’

তিনি বলেন, ‌‘সারা দেশে বিএনপি অটুট থাকছে। ১৬ বছর গুম, খুন হয়েছে বিএনপির লাখ লাখ মামলা জেল খেটেছে। সারা বাংলাদেশে কোটি কোটি সমর্থক বিএনপির। ৫ তারিখ পর্যন্ত তাদের হত্যালীলা মানুষ দেখেছে। তারা ব্যাংক লুট করেছে। এই মহিলা বাংলাদেশের সব কিছু ধ্বংস করে দিয়েছে।’
 

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজি, দখলবাজির সঙ্গে বিএনপির কোনো অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের জড়ানো চলবে না। বিএনপির নেতাকর্মীদের আচরণে যেন সাধারণ মানুষ কষ্ট না পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। মানুষ যেন বিএনপির কাছ থেকে ন্যায়বিচার পায়, সেই বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। কেউ যদি এসব অপকর্মে জড়িত থাকে, দল সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে—এ বিষয়ে কোনো ছাড় নেই।’

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. জাহিদ হোসেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. আউয়াল, রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডন, ড্যাব নেতারা এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান ও ‘বিজয়ের বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন রংপুর (ড্যাব)। এ সময় জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকমীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।







মুক্তআলো২৪.কম